স্পোর্টস ডেস্ক

১৭ মে, ২০১৭ ১৫:৩৯

আমাদের পৃথিবীতে স্বাগতম: ওয়ার্নারকে স্যামি

এখন হয়তো ড্যারেন স্যামিদের দুঃখটা বুঝবেন ডেভিড ওয়ার্নাররা। অন্তত স্যামির সেটাই বিশ্বাস। নইলে কি আর ওয়ার্নারকে বলেন, ‘আমাদের পৃথিবীতে স্বাগতম!’

ভাবছেন, স্যামিদের পৃথিবী কোনটা? যেখানে বেতন-ভাতা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতে হয়। সেই দ্বন্দ্বের কারণে জাতীয় দলের হয়ে না খেলার হুমকি দিতে হয়। বোর্ড সেই দাবি না মানলে শেষ পর্যন্ত জাতীয় দল ছেড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগে খেলে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।

কিছুদিন ধরে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে যা চলছে, তাতে ডেভিড ওয়ার্নাররাও তো মনে হয় সেদিকেই যাচ্ছেন। নইলে কি আর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার টুইট করেন, ‘ব্যাপারটি যদি চূড়ান্ত সীমায় যায়, তারা (বোর্ড) হয়তো অ্যাশেজের জন্য কোনো দলই পাবে না।’

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিএ) এই দ্বন্দ্বটা শুরু হয়েছে বোর্ডের প্রস্তাবিত নতুন চুক্তি ঘিরে। সিএর প্রস্তাবিত নতুন চুক্তিতে খেলোয়াড়দের মোট আয় বাড়বে প্রায় ৩৫ শতাংশ। তারপরও বোর্ডের আয়ের তুলনায় খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা নিতান্তই কম মনে করছে এসিএ।

এ ছাড়া খেলোয়াড়দের আরও কিছু আপত্তির জায়গা আছে। বেতনের বাইরেও বোর্ডের রাজস্বের একটা অংশ পেয়ে থাকেন খেলোয়াড়েরা। ১৯৯৭ সালের পর থেকে এটাও চুক্তিতে একটা ধারা হিসেবে রাখা হচ্ছে। তবে এবার প্রস্তাবিত চুক্তিতে সেই ধারায় কিছুটা বদল আনা হয়েছে। বোর্ডের চাওয়া, শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাররাই বাড়তি রাজস্বের ভাগ পাবেন। ঘরোয়া ক্রিকেটারদের দেওয়া হবে একটা নির্দিষ্ট অঙ্ক।

এ নিয়েই আপত্তি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের। যে আপত্তির পর কিছুদিন আগে সিএর প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড খেলোয়াড়দের মেইল করে হুমকি দিয়েছেন, নতুন চুক্তিতে সই না করলে আগামী ৩০ জুন বর্তমান চুক্তি শেষ হওয়ার পর খেলোয়াড়দের আর বেতন দেওয়া হবে না। ওই হুমকি পেয়েই আরও খেপেছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা।

টুইটে পাল্টা হুমকি দেওয়া ছাড়াও ওয়ার্নার ফেয়ারফ্যাক্স মিডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা কেউই চাই না, পুরো বিষয়টি এমন একটা জায়গায় চলে যাক যে অ্যাশেজ সিরিজে আমাদের কোনো দল থাকবে না, অস্ট্রেলীয় গ্রীষ্মে কোনো ক্রিকেট হবে না! বিষয়টি এখন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার হাতে।’

বোর্ড বেতন না দিলে কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবেন, সেটাও ঠিক করে রেখেছেন ওয়ার্নাররা, ‘চুক্তিই যদি না থাকে, তাহলে অবশ্যই কোথাও ক্রিকেট খেলার পথ খুঁজে বের করতে হবে আমাদের। কেউ হয়তো ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট লিগে খেলবে, ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতেও খেলবে কেউ কেউ। আমরা অবশ্যই দেশের হয়ে যত বেশি সম্ভব খেলতে চাই। কিন্তু আমাদের যদি কাজই না থাকে, তাহলে কোথাও গিয়ে খেলার পথ বের করতেই হবে।’

প্রায় একই রকম হুমকি উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ম্যাথু ওয়েডের কণ্ঠেও, ‘আশা করছি, এটার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা কিছু সময়ের জন্যও বেকার হয়ে থাকতে চাই না। কিন্তু পরিস্থিতি যদি ওই দিকে যায়, যা করার দরকার আমরা সেটাই করব। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, সিনিয়র খেলোয়াড়েরা আমাদের নির্দেশনা দেবেন।’
সূত্র: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড, এনডিটিভি

আপনার মন্তব্য

আলোচিত