নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ জুন, ২০২০ ১০:৪৭

ছড়ারপার জামে মসজিদে কামরানের প্রথম জানাজা

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের প্রথম জানাজা ছড়ারপার জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি এই মসজিদের মোতোয়ালি ছিলেন।

সোমবার (১৫ জুন) সকাল সোয়া ১০টায় সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা মেহেদী কাবুল এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স বর্তমানে মাধবপুরে অবস্থান করছে। মরদেহ সিলেটে আসার পর প্রথম জানাজা ছড়ারপার জামে মসজিদে আয়োজন করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় জানাজার নামাজ নগরীর মানিকপীর টিলায় পড়া হবে।

পরবর্তীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কামরানের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে মানিকপীর টিলায় বাবা-মায়ের কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানান মেহেদী কাবুল।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল বলেন, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমটি তার নিজ এলাকায় ছড়ারপাড় জামে মসজিদে। আর দ্বিতীয়টি মানিকপীর (র.) এর কবরস্থানে, যেখানে দাফন করা হবে। তবে সময় জানানো যাচ্ছে না। কারণ মানুষ বেশি হয়ে যাবে। মরদেহ সিলেটে পৌঁছার সাথে সাথেই দ্রুত দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

এর আগে রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মারা যান।

সোমবার (১৫ জুন) সকাল ৭টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে কামরানের মরদেহ নিয়ে সিলেটের পথে রওনা হয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

প্রসঙ্গত, সিলেট সিটি করপোরেশনের টানা দুইবারের মেয়র কামরান গত ৫ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরদিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শরীর আরও খারাপ হলে ৭ জুন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৮ জুন কামরানের শরীরে প্লাজমা থেরাপিও দেওয়া হয়েছিলে।

তবে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সোমবার ভোরে মারা যান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতি।

গত ২৭ মে কামরানের স্ত্রী আসমা কামরানেরও করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তিনি অনেকটা সুস্থ রয়েছেন এবং বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, সিলেট পৌরসভার সর্বকনিষ্ঠ কমিশনার নির্বাচিত হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন কামরান। এরপর থেকেই রাজনীতিতে তার উত্থান পর্ব শুরু। ১৯৬৯ এর উত্তাল সময়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি কামরানের। ১৯৭২ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় সিলেট পৌরসভার সর্বকনিষ্ঠ কমিশনার হয়ে চমক দেখান তিনি। সেই থেকেই সিলেট পৌরসভার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েন। টানা ১৫ বছর ছিলেন পৌরসভার কমিশনার। মাঝখানে প্রবাসে থাকায় একবার নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন। ফিরে এসে ১৯৯৫ সালে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন হলে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পান কামরান।

২০০৩ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন তিনি। ওয়ান ইলেভেনের সময় দুই বার কারাবরণ করতে হয় এই নেতাকে। ২০০৮ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায় নির্বাচনে লড়ে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে সর্বশেষ দুটি সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চোধুরীর কাছে হেরে যান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত