সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৫ জুন, ২০২০ ১৯:১৬

‘রেডজোনে’ সুনামগঞ্জের তিন পৌরসভা, অকারণে ঘর থেকে বের হলেই আটক

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সুনামগঞ্জের তিনটি পৌরসভাকে ‘রেডজোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সোমবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন। এ সময় সুনামগঞ্জ পৌরসভা ও ছাতক পৌরসভা ও ছাতক উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এসকল এলাকা রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

চিহ্নিত করা এলাকাগুলোতে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আগামী ৩ সপ্তাহের জন্য এসকল এলাকা রেডজোনের আওতায় থাকবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া কাল থেকে কঠোরভাবে মাঠে অবস্থান করবে পুলিশ, এ সময় বিনা কারণে কেউ ঘর থেকে বের হলে তাকে আটক করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

জানা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনুযায়ী প্রতি এলাকাগুলোতে এক লক্ষে ১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলে সেই সকল এলাকাকে রেডজোনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ পৌরসভা, জগন্নাথপুর পৌরসভা এবং ছাতক পৌরসভা ও ছাতক উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় এগুলোকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমানে সুনামগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৩ জন। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৫৬ জন এবং ছাতক উপজেলায় ১৬১ জন করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন। সুনামগঞ্জে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১১৭ জন এবং মারা গিয়েছেন ৪ জন, যার মধ্যে ছাতক উপজেলারই ৩ জন রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, রেডজোন করা এলাকাগুলোতে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সকল প্রকার দোকান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। শুধুমাত্র ওষুধের দোকানগুলো সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। এছাড়া রোডজোন করা এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জরুরী প্রয়োজনে ঘর থেকে বাহির হওয়া যাবে তা না হলে বিনা কারণে কেউ ঘর থেকে বের হলে তাকে আটক করা হবে বলে জানানো হয়।

ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবির বলেন, ছাতকে করোনা আক্রান্ত রোগী সংখ্যা অনেকাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে তাই আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনুযায়ী ছাতক পৌরসভা, নোয়ারাই, কালারুকা, গোবিন্দগঞ্জ এবং জাউয়াবাজার ইউনিয়নকে রেডজোন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ রেডজোন আগামী মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, আমরা ইতি মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ত্রাণ বিতরণ করেছি। যা আমার পৌরসভার জন্য পর্যাপ্ত। এই সংকটকালীন সময়ে পৌরসভা খোলা আছে এবং যথাসাধ্য ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়া আমি সকল পৌরবাসীকে অনুরোধ করবো সবাই রেডজোনের নিয়মকানুন মানবেন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, রেডজোনের মধ্যে যদি কেউ পাড়ায় আড্ডায় দেয় পুলিশ দেখতে পায় তাহলে সাথে সাথে আটক করা হবে। একই সাথে নীরবতার ফাঁকে যাতে চুরি না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখবে পুলিশ। জরুরী প্রয়োজনে যে কেউ স্বাস্থ্য বিধি মেনে বাইরে যেতে পারবেন সে বিষয়ে আমাদের আপত্তি নেই।

সুনামগঞ্জে সিভিল সার্জন ডা.শামস উদ্দিন বলেন, সবাই সচেতন হওয়ার কোনও বিকল্প নেই। আমরা ছাতক ও সদর পৌরসভাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। এখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এ রেডজোন মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়ে আগামী ৩ সপ্তাহ চলবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত