মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২১:৩৯

কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, ট্রেন চলাচল দুই ঘণ্টা বন্ধ

কালবৈশাখী ঝড়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঝড় শুরু হয়। এতে ভেঙে পড়েছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি ও বড় বড় গাছ। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টাব্যাপী এই ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের পাশাপাশি অল্প পরিমাণে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে, শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে হাওরের বোরো ফসল ও সবজিরও ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, ঝড়ে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় গাছ পড়ে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় রেললাইনের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গাছ সরিয়ে নেয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শ্রীমঙ্গলে সিলেট অভিমুখী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা জানান, রোববার বিকেলে হঠাৎ করেই কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। শ্রীমঙ্গল স্টেশনে জয়ন্তিকা ট্রেন আসার পরপরই স্টেশনের পাশে থাকা গাছ ভেঙে ট্রেনের ওপর পড়ে।

ঝড়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বেশ ক্ষতি হয়েছে। বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া আখাউড়া-সিলেট রেলপথের একাধিক স্থানে গাছ ভেঙে পড়েছে। এর ফলে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ট্রেনের কয়েক শ’ যাত্রী। তারা আরও জানান, রেললাইনের ওপর থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে নেয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ বলেন, ‘ঝড়ে সিলেট-শ্রীমঙ্গল রেললাইনের ওপর কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বিকেল থেকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। গাছ সরানোর পর সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটের দিকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও আমরা বন বিভাগের সদস্যরা মিলে লাইনের ওপর ভেঙে পড়া গাছ সরানোর পর ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।’

এদিকে, শ্রীমঙ্গলে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ও গাছ উপড়ে পড়ায় ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে উপজেলাজুড়ে ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

শ্রীমঙ্গলের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। ঝড়ের পিক টাইমের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৬ মিনিট।

শ্রীমঙ্গল কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা রকেন্দ্র শর্মা বলেন, ‘হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও অল্প শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আমরা মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বলতে পারব কৃষির কেমন ক্ষতি হয়েছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত