০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:০২
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সহকারী শিক্ষকবৃন্দকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা এবং প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে “শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ, জগন্নাথপুর” এর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-বশিরুল ইসলামের কাছে শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দরা এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ নেতা হলিয়ারপাড়া মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মইনুল ইসলাম পারভেজ, সৈয়দপুর সৈয়দিয়া শামছিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রেজওয়ান আহমেদ,পাটলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজির হোসেন,সফাত উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, শ্রীরামসি স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ হাজের আলী,ইকড়ছই মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের ফলে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকারী শিক্ষকগণকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি ধমকি এমনকি প্রতিষ্ঠানের কক্ষে বন্দি করে রাখার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার ন্যায় জগন্নাথপুর উপজেলায়ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-জনতার নামে কতিপয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আক্রোশের শিকার হন প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সহকারী শিক্ষকগণ। যা এ উপজেলার অতীত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। এর প্রতিবাদে উপজেলার সকল স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকগণের পক্ষ থেকে এমন জোরপূর্বক পদত্যাগের অপচেষ্টাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি ও অযাচিত হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে জগন্নাথপুরের ভুক্তভোগী চার শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদকে তাঁর প্রতিষ্ঠানে আসতে বাধা প্রদানসহ স্বেচ্ছায় পদত্যাগের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
পাইলগাও বি এন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমকে ছাত্র-জনতা জোরপূর্বক পদত্যাগের অপচেষ্টা চালানো হয়। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করেন।
লামাটুকের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় আরেক প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন ভূঁইয়াকে জোরপূর্বক পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হলে তিনি মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে পেলেন।বর্তমানে ওই শিক্ষক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এছাড়া ইসহাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক রাসেল তালুকদারকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং পদত্যাগ না করলে তাঁকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকিও প্রদান করা হয়।
জগন্নাথপুর শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের সদস্যরা জানান, এমতাবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে আক্রান্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকারী শিক্ষকগণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় আমাদের প্রাণপ্রিয় উপজেলায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। তাই অতিদ্রুত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান।
আপনার মন্তব্য