বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২২:৪১

‘ট্রমা কাটিয়ে’ সক্রিয় বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ, সেবা পাচ্ছে মানুষ

‘ট্রমা কাটিয়ে’ সক্রিয় হয়েছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। তারা নিয়মিত মামলা রুজুর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তদারকিও শুরু করেছে। সেবাগ্রহীতা ভুক্তভোগী মানুষের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) গ্রহণের পাশাপাশি আইনগত প্রতিকার দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অকিল উদ্দিন আহমদের যোগদানের পর থেকেই সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের জনসংযোগ বৃদ্ধি করেছেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টজনদের সমন্বয়ে থানা পুলিশকে একান্ত কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিকেলে বেশ কিছু উশৃঙ্খল জনতা বিয়ানীবাজার থানায় হামলা চালায়। এ সময় তারা পুলিশের ব্যবহৃত যানবাহন, মোটরসাইকেল, জরুরি কাগজপত্রে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি অস্ত্র, গুলি, ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুট করে। পরে অবশ্য অস্ত্র, গুলিসহ কিছু জিনিসপত্র ফিরে পায় পুলিশ। এমন ঘটনার পর ভেঙে পড়ে পুলিশের মনোবল। অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া এই বাহিনী বিয়ানীবাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। বিয়ানীবাজার থানায় অফিসারসহ বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য যোগদান করেছেন। এতে ভোগান্তি কমছে ভুক্তভোগী মানুষের।

তবে পুলিশ সদস্যরা বলছেন, মাঠে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও হেনস্তার ভয়ে কাজে আসতে সাহস পাচ্ছেন না বাহিনীর অনেক সদস্য।

বিয়ানীবাজার থানার এসআই শিমুল রায় জানান, নতুন অফিসার ইনচার্জ যোগদানের পর বিয়ানীবাজারে ১০টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। নিয়মিত মামলার আসামি হিসেবে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অকিল উদ্দিন আহমদ বলেন, রাতেও পুলিশের টহল শুরু করা হয়েছে। দু’টি টহল দল একদম গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি নিজেও টহলে বের হয়ে মানুষকে পুলিশের উপস্থিতি জানান দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান।

সূত্র জানায়, চারখাই ফাঁড়িতেও অবস্থান নিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। তাদের কার্যক্রমও কিছুটা শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিয়ানীবাজার থানার সামনে সেনাবাহিনী নিরাপত্তা দিচ্ছে। ডিউটি অফিসার ইউনিফর্ম পরা থাকলেও থানায় বেশির ভাগ সদস্য সাধারণ পোশাকে (সিভিল ড্রেস) থাকছেন। সাধারণ পোশাকে ডিউটি করার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এসআই বলেন, ‘আমরা এখনো ট্রমা থেকে বের হতে পারছি না।’

এদিকে স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বদলি ও পদায়ন নিয়েও আতঙ্ক রয়েছে। কনস্টেবল থেকে ঊর্ধ্বতন পদে প্রতিদিনই বদলির আদেশ হচ্ছে। বছরের মাঝামাঝি এমন বদলির কারণে অনেকেই স্কুল-কলেজপড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে বিপাকে পড়ছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে এক মাস পেরিয়ে গেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের বয়সও এক মাস হতে চলেছে। কিন্তু এখনো রাস্তায় পুলিশের টহল আগের মত চালু করা যায়নি। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, থানার গাড়ি ও লজিস্টিক সাপোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাই টহল শুরু হতে সময় লাগছে। তবে শিগগিরই টহল শুরু করা হবে।

এদিকে এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি পৌরশহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত