রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং থেকে

১১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ১৮:২০

বানিয়াচংয়ে কবুতরের খামার করে স্বাবলম্বী ওয়াদুদ মিয়া

মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। পশুপাখি,প্রাণী,গাছপালা লালন-পালন করা অনেকের ব্যক্তিগত শখ।কিন্তু সেই শখ কখনও কখনও জীবনের অর্থনীতির চাকাকে যে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ বানিয়াচংয়ে ওয়াদুদ।

ওয়াদুদ বানিয়াচং উপজেলা সদরের ঠাকুরাইন দীঘির পাড়ের মৃত আব্দুল শফিক মিয়ার পুত্র।লেখাপড়ার দৌড়ে বেশী দুর এগিয়ে যেতে পারেনি ওয়াদুদ।ছোটবেলা থেকেই ওয়াদুদের পশু-পাখি পালন করার প্রচন্ড আগ্রহ।

ওয়াদুদের শখের বশে ২বছর আগে কবুতর পালন করা শুরু করেছিলেন।কিন্তু চাহিদার কারণে তার খামারে বিদেশী মূল্যবান বুখারা,কিং,সিলভার সিরাজী,কালা সিরাজী,লাল বোম্বাই,ফিলিয়েজার,ইয়োলো বাগদাদ হোমার,ইন্ডিয়ান লোটন,হোয়াইট চায়না,আওল,রেড বাগদাদ,গিরিবাজ,ময়ুরীসহ অন্ততঃ আরও ১২ জাতের দেশী-বিদেশী মূল্যবান কবুতর রয়েছে তার খামারে। নিবিড় পরিচর্যা আর দেখভালোর কারণে খামারের ওই কবুতরগুলো ডিম ও বাচ্চা দিচ্ছে নিয়মিত।

একজোড়া কবুতরের বাচ্চা প্রকারভেদে ৭০০ থেকে ৪০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন করিম।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে কিনে নিয়ে যান তার খামারের কবুতর।এ থেকে তার বাড়তি আয় ছাড়াও পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন।

ওয়াদুদ জানান,দূর্লভ ও মূল্যবান এসব কবুতর পালন বেশ স্পর্শকাতর হলেও একবার বুঝে গেলে যে কেউ লাভবান হতে পারেন।

তিনি আরও জানান,কবুতরের খাবার হিসাবে গম,ভুট্টা,হেটকে,সরিষা,মসুর ও কুসুমদানা খাবার খেতে দেন।আর রোগ-বালাই বিশেষ করে ভাইরাসের আক্রমণে রানীক্ষেত ও সিআরডি রোগ বেশ ক্ষতিকর।তবে সময়মতো চিকিৎসা করাতে বার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে।খামারের পূর্ণবয়স্ক জোড়া বাঁধা কবুতর সব মিলিয়ে ১০ জোড় বাচ্চা দেয় বছরে।আর বিশেষ ব্যবস্থায় ডিম ফোটানো গেলে প্রতি-জোড়া কবুতর থেকে ১৪ জোড়া বাচ্চা নেয় সম্ভব।

তিনি আরও জানান,জাত ও চাহিদা ভেদে কবুতরের মূল্যেরও পার্থক্য রয়েছে।বিচিত্র সব সব কবুতরের একেকটির একেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।গিরিবাজ  কবুতর শূন্যে একটানা ডিগবাজি ও ৫/৬ ঘণ্ট উড়তে পারে। আবার রেসিং হোমার১৪০০ থেকে ১৬০০ কিলোমিটার দুরে নিয়ে ছেড়ে দিলেও আটকা না পড়লে তারা নিজ বাসায় ফিরে আসতে সক্ষম হয়।

খামারি ওয়াদুদ মিয়া জানান,প্রতিদিন তার কবুতর ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকার বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর বিক্রি হয়।তবে ঔষধ বাবদ তেমন টাকা খরচ হয়না বলে তিনি জানান। এই কাজে পরিবারের অন্যরা খুব সাহায্য করে থাকেন। প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে কবুতর পালনে উদ্বুদ্ধ করে চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে অনেকেই ভাগ্য বদল করতে পারে বলে অভিমত ওয়াদুদ মিয়ার।

এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবুল কাশেম জানান,প্রশিক্ষণ নিয়ে কবুতর পালন বেশ লাভজনক।তা ছাড়া আমরা কবুতর খামারিদের জন্য যে কোন সাহায্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত