নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২১:০৪

লাক্কাতুরা সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে চা বাগানের ছাত্রদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি

‘সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ( লাক্কাতুরা)’  ভর্তির ক্ষেত্রে চা বাগানের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার এবং বিশেষ কোটার দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করেছে চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ। শুক্রবার বিকেলে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (লাক্কাতুরা) এর সম্মুখ থেকে শুরু হয়ে মালনীছড়া, লাক্কাতুরা এবং চৌকিদেখী এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার স্কুল সম্মুখে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিল ও সমাবেশে সিলেটের চা বাগান সমূহের ৩ শতাধিক ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনের সংগঠক অধীর বাউরীর সভাপতিত্বে এবং শান্ত বাউরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ এর সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাশ, রানা বাউরী, স্মৃতি রানী মুদি প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, লাক্কাতুরা চা বাগানে নব নির্মিত সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ১ হাজার শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং স্কুলের জন্যে জমি অধিগ্রহণকালে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয় যে, এই স্কুল নির্মিত হচ্ছে শিক্ষা বঞ্চিত চা বাগানের ছাত্রদের জন্যে। সরকারের এই প্রচারণা চা শ্রমিকরা বিশ্বাস করেছিলেন, কিন্তু ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা সার্কুলারে দেখা যাচ্ছে চা বাগানের ছাত্রদের জন্যে বা বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার মানুষের জন্যে কোন বিশেষ কোটা বা ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে আজ এ কথা স্পষ্ট যে, সরকার চা শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করেছে। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন মেধা থাকলে চা বাগানের ছাত্ররা সুযোগ তো পাবে, আর বাগান এলাকায় স্কুল হওয়ায় এদের শহরে বা দূরে যেতে হচ্ছে না! বাস্তবে সরকারের নীতির কারণে চা বাগানে শিক্ষার অবস্থা খুব দূর্বল, শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ উপযোগী পরিবেশও গড়ে তোলা হয়নি, তাই সমাজের অন্য অংশের সাথে চা বাগানের ছাত্রদের প্রতিযোগিতায় নামানো মানে রাষ্ট্রের ও সরকারের দায় এড়িয়ে যাওয়া। আর চা বাগানে সরকারি মাধ্যমিক স্কুল নির্মাণের দাবি দীর্র্ঘদিনের, শুধু তাই নয় বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ্য সমাবেশে এ দাবি পূরণের আশ্বাসও প্রদান করা হয়েছিল। আবার সরকার ঢাকা শহরের মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা এবং সারাদেশের বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি ক্ষেত্রে ৪০ ভাগ এলাকা কোটা নির্ধারণ করেছে। তাই চা বাগানের শিক্ষার বিশিষ পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে এই স্কুলে ভর্তি ক্ষেত্রে চা বাগানের ছাত্রদের অগ্রাধিকার এবং বিশেষ কোটা দাবি করছি।

সমাবেশ থেকে বক্তারা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ২০ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ, বাগানে বাগানে সংহতি সমাবেশ এবং বাগানের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত