নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ মার্চ, ২০১৮ ০১:০৪

‘ভিন্ন কায়দায়’ নামাজ পড়ত ফয়জুর

লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর হামলাকারী ফয়জুর হাসানের নামাজ পড়ত ভিন্ন কায়দায়। নামাজ পড়া নিয়ে স্থানীয় মসজিদ ও তার কর্মস্থলের মসজিদের ইমামের সাথে প্রায়ই বিতর্কে জড়াতো সে। মতে না মেলায় জামাতে নামাজ আদায় না করে ঘরে একা একা নামাজ পড়ত ফয়জুর। ঘরে একা একাই বেশিরভাগ সময় কাটাতো সে।

এমনটি জানিয়েছেন ফয়জুরের মামা ফজলুর রহমানের স্ত্রী রিপা রহমান। বুধবার (৭ মার্চ) দুপুরে সিলেট শহরতলীর শেখপাড়াস্থ বাসায় সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এমনটি বলেন রিপা।

জাফর ইকবালের উপর হামলার পর মামা ফজলুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ধর্ম পালন নিয়ে মতের সাথে না মেলায় ফয়জুরকে পছন্দ করতেন না তার বাবা হাফিজ আতিকুর রহমান। যিনি নিজেও একজন মাদ্রাসা শিক্ষক।

রিপা রহমান বলেন, ফয়জুর অনুসরণ করতো তার কুয়েত প্রবাসী দুই চাচাকে। এই দুই চাচা আবদুল জাহার ও আবদুল সাদিকের মতো সেও ভিন্ন কায়দায় নামাজ পড়ত। অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভাল সম্পর্ক না থাকলেও কুয়েত প্রবাসী দুই চাচার সাথে সখ্য ছিল ফয়জুরের। এই দুই চাচা নিয়মিত আর্থিক সহযোগিতা করতেন ফয়জুরের পরিবারকে। সিলেট শহরতলীর শেখপাড়ায় জায়গা কিনে ফয়জুরের পরিবারকে বাসাও করে দেয় চাচা জাহার ও সাদিক। এর বাইরে তার দামি মোবাইল, ল্যাপটপসহ দামী দামী কাপড় চোপড় প্রায়শ কিনে দিতেন এই দুই চাচা। এগুলো নিয়ে নিকট আত্মীয় স্বজনসহ পারা প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ দেখা দিলেও ফয়জুরের পরিবার এসব এড়িয়ে যায় সব সময়। বর্তমানে সাদিক দেশে অবস্থান করলেও জাহার কুয়েতে অবস্থান করছেন। রাজধানী ঢাকায় বাড়ি রয়েছে জাহারের। কুয়েত থেকে প্রায় নিয়মিতই দেশে আসা যাওয়া ছিল তাদের।

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়াও জানিয়েছেন, ফয়জুর অন্যদের চাইতে ভিন্ন কায়দায় নামাজ পড়ত। এনিয়ে তার বাবা-মার সাথেও প্রায়ই ঝগড়া হতো।

গত শনিবার শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলায় আহত হন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আহত হওয়ার পর তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ওই দিন তাকে ঢাকায় সিএমএইচে হেলিকপ্টার যোগে স্থানান্তর করা হয়। হামলার পর শিক্ষার্থীরা হাতেনাতে আটক করে ফয়জুরকে গণপিটুনি দেয়। আহত অবস্থায় সে এখন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত