নিজস্ব প্রতিবেদক

০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২৩:৫১

যান চলাচল রুখতে ক্বিন ব্রিজের প্রবেশমুখে লোহার বেড়ি

সিলেটের ঐতিহাসিক ক্বিন ব্রিজে সংস্কারকালীন সময় এ সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল রুখতে লোহার তৈরি বেড়ি স্থাপন করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সিসিক মেয়র আরিফুল হকের উপস্থিতে নগরীর সুরমা মার্কেটস্থ পয়েন্ট সংলগ্ন সেতুর প্রবেশ মুখে এ বেড়ি স্থাপন করা হয়।

এর আগে সংস্কারের জন্য আজ রোববার দিবাগত রাত থেকেই ঐতিহাসিক এই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সিসিক। তবে সংস্কারকালীন সময় পায়ে হেঁটে সেতুটি পারাপার হতে পারবেন পথচারীরা।

১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে সুরমা নদীর উপর নির্মিত এই সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। তবু প্রতিদিন এই সেতুর উপর দিয়ে সুরমা নদীর এপাড়-ওপাড় হয় অসংখ্য যানবাহন। ফলে দেখা দিয়েছে ঝুঁকি। এমতাবস্থায় সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি করপোরেশন। সংস্কার কাজের জন্য  দিবাগত রাত থেকেই এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে স্থানীয় সরকারের এ প্রতিষ্ঠানটি।

রোববার দুপুরে ক্বিন ব্রিজ এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ সেতু দিয়ে চলাচলে অভ্যস্ত হয়ে পরা কয়েকজন যাত্রী রিকশা ও সিএনজি চালিত অটো রিকশা নিয়ে ব্রিজটি পার হতে গেলে এর প্রবেশ মুখে থাকা লোহার তৈরি বেড়ি স্থাপনের কারণে ফিরে যাচ্ছেন। তবে বেড়ির পাশা দিয়ে পথচারীরা হেটে পারাপার হতে পারছেন।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিন শিহাব সিলেটটুডে২৪কে জানান, গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকেই এই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারপরও বিচ্ছিন্নভাবে যাতে কোন যানবাহন সংস্কারকালীন সময় এ সেতু দিয়ে পারাপার হতে না পারে সে কথা মাথায় রেখেই লোহার তৈরি বেড়ি স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সিসিক।

জানা যায়, সিটি করপোরেশন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সম্মিলিত সিদ্ধান্তেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া ঐতিহাসিক ক্বিন ব্রিজটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শাহাব উদ্দিন শিহাব আরও জানান, ক্বিনব্রিজ সংস্কারের কাজ শেষ হলে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য ফের খুলে দেওয়া হতে পারে, তবে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে এই সেতুটিকে রক্ষণের জন্য এর উপর দিয়ে যান চলাচল একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও ভাবছে সিসিক। এছাড়াও জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে পর্যায়ক্রমে সিলেট নগরীর শেখঘাট এলাকায় সুরমা নদীর উপর নির্মিত কাজিরবাজার সেতু দিয়ে সব ধরণের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হতে পারেও জানান সিসিকের এ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে ১৯৩৩ সালে সুরমা নদীর ওপর এই ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ব্রিজটির নির্মাণ শেষে ১৯৩৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল ক্বিনের নামে এই সেতুর নামকরণ করা হয় ক্বিন ব্রিজ। দৃষ্টিনন্দন লোহার পিঞ্জিরার ওপর লাল রং দেওয়া ব্রিজটির অবকাঠামো দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে সিলেট শহর থেকে পাক সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় ঐতিহাসিক কিণ্ব ব্রিজে মাইন বিস্ফোরণ ঘটালে এর একাংশ ধসে যায়। পরে সরকার এটি পুনর্নির্মাণ করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত