শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৬:৫৯

শ্রীমঙ্গলে পালিত হচ্ছে বড়দিন

যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার মতো শ্রীমঙ্গলের খ্রিষ্টধর্মালম্বীরা উদযাপন করছে বড়দিন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন বড়দিন হল পুনর্জন্ম, নতুন শুরু, ক্ষমা ও শান্তি এবং ঈশ্বর ও মানুষের সম্পর্কের নবজীবন দানের উৎসব। তাই মঙ্গলবার রাত থেকেই যীশুর জন্মোৎসব বড়দিনের উৎসবে মেতেছে শ্রীমঙ্গলের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা।

এদিকে বড়দিনে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চার্চগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র‍্যাবের টহল ও পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও শ্রীমঙ্গলের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করছে এই দিনটি। রঙিন ফুল, বেলুন আলোক সজ্জায় সেজে উঠেছে শ্রীমঙ্গলের চার্চগুলো। সকাল ১০টায় সেন্ট জোসেফ চার্চে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি, এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট ক্যাথলিক ধর্মপাল বিশপ বিজয় এনডি ক্রুজ,ফাদার নিকোলাস বাড়ৈ।

বড়দিন উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১২টি খাসিয়া পুঞ্জিসহ মোট ৬৬টি চার্চে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে গির্জাসহ শ্রীমঙ্গল শহরের সেন্ট জোসেফ ক্যাথলিক চার্চ, লাউয়াছড়া পুঞ্জি প্রেসবিটারিয়ান চার্চ। ছিল বড়দিনের বাহারি কেক, ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন, বাইবেল কুইজ প্রতিযোগিতা, ছেলে মেয়েদের খেলাধুলা ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুধু খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষই নয়, নানা সম্প্রদায় ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষও এই উৎসবে অংশ নেয়।

মূলত ডিসেম্বরের শুরুতেই খ্রিস্টান পরিবারগুলোর মধ্যে শুরু হয়ে যায় বড়দিনের আমেজ। বড়দিনের প্রধান আকর্ষণ ক্রিসমাস ট্রি, যীশুর জন্ম স্থানের আদলে গোশালা সাজানো, আলোক সজ্জার পাশাপাশি মজাদার কেক তৈরি, প্রিয়জনদের উপহার কেনায় অনেকে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

সিলেট প্রেসবিটারিয়ান সিনড এর যুগ্ম সম্পাদক ফিলা পতমি বলেন ‘বড়দিন উপলক্ষে আমরা মাসব্যাপী অনেক রকমের আয়োজন করেছি। এসব আয়োজনের মধ্যে পুঞ্জির প্রতিটি ঘরে ঘরে কীর্তন, বড় দিনের উপাসনা,বড়দিনের তোরণ নির্মাণ ও প্রীতিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। আমরা আশা করি প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের বড়দিনের উৎসব উদযাপন করতে পারবো।

তথ্য মতে প্রায় দুই হাজার বছর আগে বর্তমানের ফিলিস্তিনির বেথেল হেমের এক গোশালায় মাতা মেরীর গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন যীশু খ্রিষ্ট। সেই থেকে প্রতিবছর ২৫ ডিসেম্বর সারা বিশ্বের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মহা সমারোহে পালন করেন যীশু খ্রিষ্টের জন্মদিন।

খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা জানান- পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা যীশু খ্রিষ্টের জীবনের ব্রত ছিল। তিনি মানুষকে দেখিয়েছিলেন মুক্তি ও কল্যাণের পথ। যীশু অনাহার ক্লিষ্ট দুঃখী, নির্যাতিত ও গরীব মানুষের কল্যাণ বিশ্বময় শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। জীবনাচরণ ব্যবহার ও ঐশ্বর্যবান ব্যক্তিত্বের মধ্য দিয়ে মহামতি যীশু সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে অমর হয়ে আছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত