সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ০২:২৪

নবাব উদ্দীনের বই নিয়ে সিলেটে লেখক-পাঠক আড্ডা

প্রবাসী সাংবাদিক ও লেখক নবাব উদ্দীনকে বিলেতের বাংলা মিডিয়া ও বাঙালী কমিউনিটির সত্যিকারের নবাব বলে অভিহিত করেছেন বক্তারা।

রবিবার নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারস্থ হোটেল গোল্ডেন সিটিতে আয়োজিত লেখক-পাঠক আড্ডায় বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

নবাব উদ্দীনের ব্যক্তিত্ব, প্রতিভা, সাংবাদিকতা, এবং তার সাহিত্যচর্চা নিয়ে আলোকপাত করেন তারা। অনুষ্ঠানে তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ অতিথিরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নবাব উদ্দীনের জীবন-কর্মের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভিডিওচিত্রে লেখক ও সাংবাদিক নবাব উদ্দীনের কৈশোর, যৌবন, সাংবাদিকতা, প্রবাসজীবন ও কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।

সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনুর সভাপতিত্বে ও সলেট ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেবের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায়  বক্তব্য রাখেন স্কলার্সহোমের একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. কবীর চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, দৈনিক উত্তরপূর্বে প্রধান সম্পাদক আজিজ আহমেদ সেলিম, দৈনিক সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর, জনমতের নির্বাহী সম্পাদক সাঈম চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুম।  

স্কলার্সহোমের একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. কবীর চৌধুরী বলেন, ‘ব্রিটেনে যসব পত্রিকা প্রকাশ হতো তারমধ্য জনমত ছিল একটু অন্যরকম। প্রবাসী বাঙালীদেরকে স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত করতে জনমতের ভূমিকা ছিল অনন্য। আমি ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির ছাত্র থাকাকালীন উত্তর পশ্চিম ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি হিসাবে যোগ দিই। নবাব উদ্দিনের সাথে আমার পরিচয় আশির দশকে। সে অনেক গুণে গুণান্বিত একজন মানুষ। তার পরিচয় অনেক বিস্তৃত। নবাব নিজে হয়তো নাটক করে না কিন্তু সে বহু নাট্যকারকে সে সৃষ্টি করেছে। সে হয়তো গান করতে পারেনা কিন্তু অনেক সঙ্গীতশিল্পীকে সে তৈরী করেছে। তাদেরকে সহযোগিতা করেছে, প্রেরণা জুগিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে অনেক কে নিয়ে সে অনুষ্ঠান করেছে।’

সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, ‘নবাব উদ্দিন সম্প্রতি সাপ্তাহিক জনমত থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। আমি আশা করি তার এ দৃপ্ত পথচলার শেষ হবে না। তিনি নতুন কোনও না কোনও কার্যক্রমে অংশ নেবেন । সেখানেও তার সফলতা কামনা করি। ’

দৈনিক উত্তরপূর্বে প্রধান সম্পাদক আজিজ আহমেদ সেলিম তার বক্তব্য বলেন, ‘ব্রিটেনের সাংবাদিকতা জগতে নবাব উদ্দিন এমন একটি নাম যে নামটি সবাই জানে। সবাই উচ্চারণ করে। আমি ১৯৯৮ সালে ব্রিটেনে গিয়েছিলাম। সেখানে কবীর ভাই আর নবাব উদ্দিনের মাধ্যমে আমার অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে দেখা হয়। তাদের মাধ্যমে আমার আবদুল গাফফার চৌধুরীর সাথে পর্যন্ত দেখা হয়।’

দৈনিক সিলেট মিরর সম্পাদক আহমেদ নূর বলেন, ‘নবাব উদ্দিন ও ‘সাপ্তাহিক জনমত’ একই সূত্রে গাঁথা। প্রায় ত্রিশ বছর তিনি এটা সম্পাদনা করেছেন। একটি পত্রিকা টানা প্রায় ত্রিশ বছর সম্পাদনা করা একটি বিরল কাজ। নবাব উদ্দিন দেশে ও বিদেশে সংবাদজগতের নবাব।’

জনমতের নির্বাহী সম্পাদক সাঈম চৌধুরী বলেন, ‘আমি নবাব উদ্দিনের কর্মজীবনের উপর লেখা বই ‘দীপÍ পথচলা’র সম্পাদনা করেছি। নবাব উদ্দিন বিলেতে বাংলা সাংবাদিকতাকে সমৃদ্ধ করার জন্য যে কাজটি করে যাচ্ছেন সেটি জানানোর জন্যই এই বইটি সবার হাতে তুলে দিতে চাইছি।’

লেখক নবাব উদ্দিন তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘আজ আমি আপ্লুত ও নির্বাক। আমি ১৯৯০ সাল থেকে জনমতের সাথে জড়িয়ে ছিলাম। আর এজন্য বিলেতের মানুষের স্নেহ, ভালোবাসা ও মমতা পেয়েছি। সাথে সাথে এটি একটি চ্যালেঞ্জিং ছিল। অনেক সময় হুমকিরও মুখোমুখি হয়েছি। সাংবাদিকতা মানেই চ্যালেঞ্জ। আমি জনমত থেকে সরে গেলেও মিডিয়া থেকে সরে যাইনি। আমার সম্পাদিত বই ‘দ্যা রেসিস্ট মার্ডার অব আলতাব আলী’ একজন বর্ণবাদী আক্রমণে মারা যাওয়া মানুষকে নিয়ে সেটি নিয়ে লেখা। এবং অপর বইটি প্রবন্ধ নিবন্ধের বই। যেখানে আমি আমার ফেলে আসা দিনগুলোকে নিয়ে লিখেছি।’

অনুষ্ঠানের শেষে নবাব উদ্দীনের লেখা দুটি বই ‘যেতে যেতে পথে ও দ্যা রেসিস্ট মার্ডার অব আলতাব আলী ও তার উপর লেখা সাঈম চৌধুরীর সম্পাদনায় ‘দীপ্ত পথচলা’র মোড়ক উন্মোচন হয়। ‘দীপ্ত পথচলা’য় ৭১ জন লেখক নবাব উদ্দীনকে নিয়ে লিখেছেন। বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকে ঘিরে হয়েছিল অনেকগুলো আলোকিত মানুষের মিলনমেলা।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট নগরের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মদনমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, ব্রিটেনে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতা মিজিানুর রহমান, দৈনিক সিলেট মিররের প্রধান বার্তা সম্পাদক জিয়াউস শামস শাহীন, দৈনিক সবুজ সিলেটের উপ সম্পাদক আ.ফ.ম সাঈদ, দৈনিক সিলেট বাণীর নির্বাহী সম্পাদক এম এ হান্নান, দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল কাদের তাপাদার, সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমেদ, বৈদেশিক সংবাদদাতা সমিতি সিলেটের সভাপতি খালেদ আহমদ, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক উজ্জ্বল মেহেদী, দেশ টিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী, দৈনিক যুগভেরীর বার্তা সম্পাদক সজল ছত্রী, সাংবাদিক আব্দুল বাতিন ফয়সল, মঈন উদ্দিন মনজু, ফারুক আহমেদ, আহমাদ সেলিম, মো. ফয়ছল আলম, শেখ আশরাফুল আলম নাসির, মুনশী ইকবাল, বেলাল আহমেদ, মো. করিম মিয়া, সৌরভ পাল, রাসেল, মামুন পারভেজ, ইদ্রিছ আলী, শুভ্র দাস, আলমগীর হোসেন, আবু তাহের মো. নাজিম, মাহফুজুর হক, বাবলুল হক, সৈয়দ আখতারুজ্জামান, এইচ এম শহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম সবুজ, চৌধুরী মোহাম্মদ সুহেল, অনিল পাল, নাবিল চৌধুরী, এস আলমগীর, মো. হাসান শিকদার সেলিম, সাহেদ আহমদ, শাহীন আহমদ চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, তাসনীমা নাজনীন, লতিফা সিদ্দিকা তামান্না ও আশরাফুল ইসলাম অনি।  

আপনার মন্তব্য

আলোচিত