রাবি প্রতিনিধি

১৮ মে, ২০১৭ ১৭:২৬

রাবি শিক্ষার্থীকে কর্মচারীর মারধর

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী। শিক্ষার্থীকে চড় মারাসহ ইট নিয়েও মারতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকালে বানেশ্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে ক্যাম্পাসে আসার সময় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত মো. সুমনুজ্জামান সুমন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক-২ ভবনে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনে সহায়ক কর্মচারী হিসেবে কর্মরত। তিনি পুঠিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সুমনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি জেলও খেটেছেন। পুঠিয়া উপজেলার ২নং ইউনিয়ন বেলপুকুরের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বদির ছেলে সুমন।

ভুক্তভোগী মো. মানিক আলী বেলপুকুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহকারী সম্পাদক। আরেক ভুক্তভোগী মো. রতন আলীও স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের (২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী।

ঘটনার ভুক্তভোগী মো. রতন আলী বলেন, বানেশ্বর থেকে ৯টা ৩৫-এ ছেড়ে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আমরা আসছিলাম। বাস বেলপুকুর এলাকায় আসলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সুমন উঠেন। উঠেই তিনি আমাকে বেড়ে গেছি বলে বকাঝকা শুরু করেন। এ সময় পাশে বসে থাকা মানিক জানতে চায়, এ রকম আচরণ করছেন কেন? তখন সুমন চড় মারেন মানিকের গালে। পরে আমাদের দুজনকেই মারধর করতে থাকেন তিনি। সুমনের সঙ্গে দুই-একজন স্থানীয় ছেলেপেলেও ছিল। এসময় সুমন তার এলাকার অনেককে ফোন করতে থাকেন। পরে আমাদের নির্দেশে বাস দ্রুত চলে আসে।

রতন আলী আরো বলেন, আসার সময়ও মারধর, বকাবকি, হুমকিধামকি দেয় সুমন। পরে বাস থেকে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ কেন করল, এ নিয়ে উপস্থিত সবার সঙ্গে কথা বলতে থাকি। এসময় আবার সুমনের সঙ্গে আবার তর্ক লেগে যায়। সুমন ওই সময় ইট নিয়ে মারতে আসলে উপস্থিত কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা ফেরায়। মো. মানিক আলীও এসব কথা স্বীকার করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসে মারামারির পর বাস থেকে নামলে তাদের মধ্যে আবার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় সুমন ইট হাতে মারতে উদ্ধত হলে সবাই তাকে আটকে ফেলে। এ সময় সুমনকেও কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীরা চড়-থাপ্পড় দেয়।

সহায়ক কর্মচারী হিসেবে কর্মরত মো. সুমনুজ্জামান সুমন বলেন, ‘আমি মানিককে ছোট ভাই হিসেবে চড় দিয়েছিলাম।’ কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাদের সঙ্গে আগের এক ছিনতাইয়ের মামলার ঝামেলা রয়েছে বলেও স্বীকার করেন সুমন।

সমাধান করতে গিয়ে সুমনকে সর্তক করে দিয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মুজিবুল হক খান বলেন, ‘যে হিসেবেই চড় মারুন না কেন, লিখিত অভিযোগ করলে এর পরিণতি অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। (ছাত্রলীগ ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির উল্লেখ করে) এই যে নেতাফেতা নিয়ে আসছেন, এর কিছুই করতে পারবে না।’ তবে পরে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে প্রক্টরের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত