শাবি প্রতিনিধি

০৫ মার্চ, ২০১৮ ২০:৫৭

জাফর ইকবালের উপর হামলা: ২য় দিনেও আন্দোলনমুখর শাবি

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যক ও দেশবরেণ্য গবেষক প্রফেসর ড. জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের     (শাবিপ্রবি) শিক্ষকবৃন্দ।

সোমবার (৫মার্চ) সকাল ১১টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করে শাবি শিক্ষকবৃন্দ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকবৃন্দ

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে হামলাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতীকী কর্মবিরতি ও অবস্থান নেন শিক্ষকরা। এ অবস্থান থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসে মৌন মিছিলের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।

অবস্থান চলাকালে সমাবেশে আইকিউএসি পরিচালক আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস বলেন, ভিসিকে অনুরোধ করবো সাদা পোশাকের গোয়েন্দা গঠন করা। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে হেল্প করবে। কেননা ৫/৬ জন ব্যক্তির ব্যক্তি নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডির সমস্ত ক্যাম্পাস নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর আমেনা পারভীন বলেন, ক্যাম্পাসে জাফর ইকবালকে হামলার মাধ্যমে হামলাকারীরা জানান দিল এ ক্যাম্পাসে যে কোন ঘটনা ঘটানো সম্ভব। সরকারকে অনুরোধ করবো যেন এ ঘটনার দ্রুত বিচার করা হয়।
অন্যদিকে শাবি ভিসি ফরিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু করা হবে। এবং বিভাগের প্রধানদের কাছে আমার অনুরোধ থাকলো যারা ক্লাসে অধিকাংশ সময় অনুপস্থিত তাদের তথ্যগুলো আমোকে সাহায্য করবেন।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ, প্রফেসর আমেনা পারভীন, শিক্ষ সমিতির সভাপতি প্রফেসর সৈয়দ হাসানুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অন্যদিকে ড. জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মৌন মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেকট্রিকাল এ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৫মার্চ) সকালে মৌনমিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ ওয়াজেদ মিয়া ভবন থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যর মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে প্রফেসর ড. জহিরুল ইসলাম বলেন, কোন মানুষের যদি টার্গেট থাকে নিজের জীবনের আশা ত্যাগ করে কাউকে হামলা করবো তাহলে সে কোন একদিন সুযোগ পাবেই। সুতরাং জাফর ইকবালকে হামলা চালানোর বিষয়ে আমরা পুলিশকে কোনভাবে দোষারোপ করতে পারিনা।

এসময় প্রফেসর ড. শহিদুর রহমান বলেন, হামলাকারী যদি স্যারের বইয়ের নাম ‘ভূতের বাচ্চা সুলেমান’ দেওয়ার কারণে হামলা করে থাকে তাহলে তার উদ্দেশ্য মোটেও ঠিক ছিলনা। কেননা স্যার মুসলমানদের নবী সুলেমানের নাম অনুসারে বইয়ের নাম রাখেন নি। আর তাছাড়া স্যার তার মায়ের কাফফারা আদায় করেছেন এবং সবসময় তিনি আল্লাহ খোদার নাম উচ্চারণ করেছেন। সুতরাং, তিনি নাস্তিক হতে পারেন না।

সন্ধ্যায় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া মঙ্গলবার (৬মার্চ) ও বুধবার (৭মার্চ) দুইদিনব্যাপী মৌনমিছিলের ঘোষণা দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়।

অপরদিকে, সোমবার (৪মার্চ) সকাল ১১টা হতে দুপুর ১পর্যন্ত প্রফেসর ড. জাফর ইকবালকে হত্যার প্রতিবাদে ক্লাস বিরতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত