বিনোদন ডেস্ক

১৬ জুন, ২০১৬ ১৭:০৫

ধর্ষণের প্রতিবাদে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র 'সেই মেয়েটা'

সামাজিক অবক্ষয় ধর্ষণের প্রতিবাদে নির্মিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “সেই মেয়েটা”।

চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন কাকতাড়ুয়া থেকে এটি নির্মাণ করেছেন নবীন পরিচালক ফয়সাল খলিলুর রহমান। সৌমেন অনন্তর লেখা কবিতা, মুনমুন মুখার্জীর আবৃত্তিতে এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন মাহমুদা আশরাফি আশা, বাবুল আহমেদ, হামিদা খান, আলীরেজা হাসিব, রাবেয়া হোসেন রাবু, ভক্তিদাশ, উত্তম কাব্য, আসিফ আল রাজি, আমেনা হোসাইন প্রমুখ।

চলচ্চিত্র সম্পর্কে ফয়সাল বলেছেন, পত্রিকার পাতা খুললেই শুধু নারী নির্যাতনের খবর। দেখে মনে হয় আমাদের সমাজে মেয়ে মানেই বিরক্তিকর, অপ্রয়োজনীয় জীব। একটা মেয়ে জন্ম নিলে প্রথমে মা-দাদীরাই মাথায় হাত দেয়। ছেলেরা সারাজীবন খেলতে পারে, মেয়েরা একটু বড় হলেই আর বাইরে বের হবে না। শহর বা গ্রাম সব মেয়েরাই মানুষরূপী কুকুরদের লালার কারণ হয়। গলির ধারের বদমাশগুলো ঘেউঘেউ করে। রাস্তায় এসিড ছুড়ে ঝলসে দেয়া হয় রূপবতীর চামড়া। কলেজে যাওয়ার সময় বাসের হেল্পাররা গায়ে হাত দেয়। পাড়ার বড় ভাই না হয় ক্যাম্পাসের সিনিয়রদের কুনজর থেকে বাঁচার উপায় থাকে না।

কোনদিন যদি কোন মেয়ে প্রতিবাদী হয়ে সমাজপতিদের কাছে নালিশ জানায়, তাহলে সমাজপতি মেম্বার চেয়ারম্যান পঞ্চায়েতের নাম করে টাকা দিয়ে তার ইজ্জতের রফাদফা করে দেয়। অপমান সহ্য করতে পারলে বাঁচে, নইলে আত্মহত্যা করে মরে। না মরলেও খুন হবে নিশ্চিত।

অথচ নারী-পুরুষ মিলে কত ভালো থাকা যায়। অথচ আশেপাশে তাকালে দেখি, একটি মেয়ের মেয়ে হয় জন্মানো যেন ভুল। অনাচার, অবিচারগুলো দিনদিন মানিয়ে নিচ্ছি নিজেদের জীবনের সাথে। একটি মেয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না। বখাটেদের অত্যাচারে ঝুলে যাচ্ছে, ঝরে যাচ্ছে সমাজ থেকে। এটাকে আর মামুলি ব্যাপার মানতে চাই না। এই চলচ্চিত্রে গল্পটাকে একটু বদলানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৪২০ বঙ্গাব্দের ১লা আষাঢ় সিলেটের একদল সৃষ্টিশীল তরুণ-তরুণীদের নিয়ে গঠিত হয় কাকতাড়ুয়া। নামের সাথে কাজেও বাংলাদেশের অন্যান্য সংগঠন থেকে এটি একটি ব্যতিক্রমী সংগঠন। তাদের সব কাজ হয় ক্যামেরায়। স্থিরচিত্র ও চলচ্চিত্র বিষয়ক এ সংগঠন সামাজিক অসংগতিগুলো তুলে ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে। ইতোমধ্যে মাদক ও যুব সমাজের অবক্ষয় নিয়ে নির্মিত হয়েছে “ঐশি”, প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে নির্মিত হয়েছে “ভুয়া ডাক্তার”, প্রাণি অধিকার নিয়ে নির্মিত হয়েছে “ঘেউ”, টেলিফোনে প্রতারণা নিয়ে নির্মিত হয়েছে “জ্বিনের বাদশাহ”।

জহির রায়হানের গল্প একটি জিজ্ঞাসা অবলম্বনে কাকতাড়ুয়া নির্মাণ করেছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র “প্রশ্ন”। এছাড়া মৌসুমী ফল ও শাকসবজিতে বিষ মিশানো নিয়ে “ফল সম্মেলন” নামে আরেকটি চলচ্চিত্রের কাজ চলছে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাকতাড়ুয়া শুরু করেছে বাংলা বানান শুদ্ধি অভিযান। সিলেটের বিভিন্ন রাজপথ, অলিতে গলিতে, মুদিদোকানে বানান শুদ্ধি অভিযান চালিয়েছে তারা। এছাড়াও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের আগেরদিন “নন-ভ্যালেনটাইন মহাসমাবেশ” করে সারা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে সংগঠনটি।

ভিডিও : Short Film: Sei Meyeta

আপনার মন্তব্য

আলোচিত