
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:১১
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় শীত বাড়তেই জমে ওঠেছে ভাপা পিঠা বিক্রি। গত দুই সপ্তাহ যাবত ভোর ও সন্ধ্যায় কুয়াশার মধ্য দিয়ে শীত নামছে। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চলছে পিঠা বিক্রির ধুম।
পিঠা নিয়ে বাঙালির আবেগ চিরকালের। নানা রকমের পিঠার আয়োজনের মধ্যে অন্যতম হলো ভাপা পিঠা। ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানা বয়সী মানুষ পিঠা খেতে আসছেন পিঠার দোকানে। তবে আগের মত এখন আর বাড়িতে ভাপা পিঠা তৈরির উৎসাহ দেখা যায় না। বর্তমানে অভিনব পন্থায় রাস্তার পাশে, অলিতে-গলিতে ও মোড়ে-মোড়ে ভাপা পিঠা বিক্রি হতে দেখা যায়। পিঠাপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে এসব দোকান।
শীতের মৌসুমে মুখে জল আনা ভাপা পিঠার দোকানে ভিড় করছে শিশু-কিশোর, বৃদ্ধসহ প্রায় সকল বয়সী মানুষ। কেউ কেউ আবার পিঠা খেতে খেতে মজার গল্পে মেতে উঠছেন পিঠার দোকানে।
জগন্নাথপুর উপজেলার সদর, রানীগঞ্জ বাজার, সৈয়দপুর বাজার, মিরপুর বাজার, কলকলিয়া বাজারসহ সকল হাটবাজারে ভাপা পিঠা বিক্রির চিত্র বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে।
জগন্নাথপুর শহরের স্থানীয় বাসিন্দা, সমাজকর্মী শাহরিয়ার হোসেন জানান, আমরা প্রায়ই আমাদের জগন্নাথপুর বাজার থেকে পিঠা খাই। চাল ভেঙে আটা করে পিঠা বানানোর সময় সুযোগ হয় না। ঝামেলা ছাড়া স্বল্প দামে হাতের নাগালে এখন পিঠা পাই।
পিঠা খেতে আসা মাওলানা নজরুল ইসলাম বলেন, মিরপুর বাজারে ১০ টাকায় নারিকেল-গুড় দিয়ে সুস্বাদু ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। ভালো লাগে, তাই নিয়মিত বন্ধু বান্ধব নিয়ে খেতে আসি।
পিঠা দোকানি জগন্নাথপুর মুন্সিপাড়া বাসিন্দা মনরা বেগম জানান, শীতকালে এলেই ভ্যানে করে বিভিন্ন বাজারে ও মোড়ে পিঠা বিক্রি করে থাকি। অন্য সময় ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি বিক্রির কাজ করি। এখন পিঠা বিক্রি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে সংসার ভালো ভাবে চলে। শীত বাড়লে পিঠা বিক্রি আরও বেড়ে যাবে। চালের গুঁড়ার সঙ্গে গুড় এবং নারিকেল মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা। প্রতি পিস পিঠা বিক্রি করছি ১০ টাকা। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে পিঠা তৈরি ও বিক্রির কাজ। দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ পিস পিঠা বিক্রি করলে খরচ বাদ দিয়ে ছয়-সাতশ টাকা আয় হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক অমিত দেব জানান, ভাপা পিঠা আমাদের দেশের গ্রামীণ বাংলার দেশীয় সংস্কৃতি লালন করছে। অন্য দিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেকারত্ব দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। অল্প পুঁজি ও কম পরিশ্রমে ভালো লাভ হওয়ায় এখন নারী-পুরুষ নেমেছেন এ পিঠা ব্যবসায়।
আপনার মন্তব্য