আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১১:৩১

শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ করতে না দেয়া ইসলামবিরোধী: ইমরান খান

আফগানিস্তানে নারী শিক্ষার্থীদের স্কুলে না পাঠাতে তালেবান সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বলেছেন, শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ করতে না দেয়া ইসলামবিরোধী ধারণা।

বিবিসিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের নারী শিক্ষা বিরোধী মনোভাব নিয়ে এ মন্তব্য করেন ইমরান খান।

গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের মাধ্যমিক স্কুলগুলো খুলে দেয়া হয়। তবে ক্লাসে রাখা হচ্ছে না কোনো মেয়ে শিক্ষার্থী। কেবল ছেলে শিক্ষার্থী এবং পুরুষ শিক্ষকদের স্কুলে আসতে অনুমতি দেয়া হয়েছে।

আফগানিস্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী শিক্ষার্থীরাও দ্রুত ফিরবে বলে বিশ্বাস ইমরান খানের।

বিবিসির সাংবাদিক জন সিম্পসনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘তারা (তালেবান) ক্ষমতায় আসার পর যেসব বিবৃতি দিয়েছে তা খুবই উৎসাহ ব্যঞ্জক। আমি মনে করি, তারা নারী শিক্ষার্থীদেরও স্কুলে যেতে অনুমতি দেবে।’

‘নারীদের শিক্ষিত করার দরকার নেই, এই ধারণা ইসলামসম্মত নয়। এমন ধারণার সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই’, যোগ করেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী।

ইমরান খান জানান, যেসব শর্ত রাখা হয়েছে তা পূরণ করতে পারলেই কেবল তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে ইসলামাবাদ।

সবার অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন করতে এবং মানবাধিকাররের প্রতি সম্মান দেখাতে তালেবান নেতৃত্বের প্রতি ফের আহ্বানও জানান ইমরান খান। তিনি এটাও বলেছেন যে, পাকিস্তানের নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন কোনো সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর জন্য আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া উচিত হবে না।

একের পর এক প্রদেশ জয়ের পর গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে পুরো আফগানিস্তান দখলের ষোলকলা পূর্ণ করে তালেবান।

দুই দশক পর আবার আফগানিস্তান দখল করে তালেবান জানায়, তারা ২০ বছর আগের অবস্থানে নেই। সহনশীলতার কথা বলেছিল কট্টর ইসলামী গোষ্ঠীটি। শত্রুদের সবাইকে ক্ষমা করে দেয়ার কথা জানায় তারা। সবাইকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আশ্বাস দেয়। সরকারে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখারও ইঙ্গিত দেয়।

তালেবানের এসব আশ্বাসের বাস্তবের কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে তালেবান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে, সেখানে বেশির ভাগ সদস্যই পশতু জাতিগোষ্ঠীর; মন্ত্রিসভায় নেই কোনো নারী সদস্য। এমনকি নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও মানা করে দিয়েছে তারা।

সবার অংশগ্রহণের সরকার না হলে আফগানিস্তান গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলেও মনে করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘তারা যদি সব গোত্রকে সরকারে না টানে তাহলে আগে বা পরে তাদেরকে গৃহযুদ্ধে পড়তে হবে। যার অর্থ, অস্থিতিশীল, বিশৃঙ্খল আফগানিস্তান সন্ত্রাসীদের জন্য উত্তম জায়গায় পরিণত হবে। আর এটা দুশ্চিন্তার বিষয়।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত