আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৪:৩৯

পাকিস্তানে ডিজেল-পেট্রলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি

মূল্যস্ফীতি ও বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে পেট্রল এবং ডিজেলসহ জ্বালানির রেকর্ড পরিমাণ দাম বাড়াল পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নতুন দর শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে বলে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জিও নিউজ।

পেট্টলের দাম লিটারে হুট করে বেড়েছে ২৬ রুপি, আর ডিজেলের দাম বেড়েছে ১৭ রুপি। দাম বেড়েছে অন্য জ্বালানিরও।

অর্থনীতি ও রাজনীতিসহ নানা সংকটে ডুবছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ। খাবারের দাম বাড়া, বিদ্যুৎসংকট, মূল্যস্ফীতি এসব নিয়েই চলতে হচ্ছে নাগরিকদের।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাদের।

ক্রুড ওয়েল ও রুপির মূল্য বিবেচনার পর জ্বালানির দাম বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগ জানিয়েছে, পেট্রলেরর দাম লিটারে ২৬ ও হাই স্পিড ডিজেলের দাম ১৭.৩৬ রুপি বাড়ানো হয়েছে। দাম বাড়ানো হয়।

এ হিসাবে পেট্রল বিক্রি হচ্ছে ৩৩২ রুপি আর হাই স্পিড ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ রুপিতে। দাম বাড়ানো হয়েছে কেরোসিন ও লাইট ডিজেল ওয়েলেরও।

এর মাধ্যমে চলতি মাসে দুইবার বাড়ানো হলো জ্বালানির দাম। পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দামে এখব বিক্রি হচ্ছে এই পণ্য। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর জ্বালানির একজন শিল্প কর্মকর্তা বলেছেন, যদি রুপির দাম বাড়ে তখন জ্বালানির দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে বিশ্বজুড়ে যেভাবে জ্বালানির দাম বাড়ছে, তাতে দেশে দাম কমার জন্য এটি যথেষ্ট নয়।

দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। ২০তম প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতির পর আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি এ দেশের অর্থনীতি।

নওয়াজের কাছ থেকে বিপুল বৈদেশিক ঋণের বোঝা নিয়ে ক্ষমতায় আসেন শহীদ খাকান আব্বাসি। সংকট কাটাতে ব্যর্থ হন তিনিও।

পূর্বসূরিদের রেখে যাওয়া বিপুল ঋণ নিয়ে পাকিস্তানের মসনদে আসেন ইমরান খান। সৌদি আরব এবং চীনের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে কোনোভাবে পাকিস্তানকে টেনে নিচ্ছিলেন ইমরান। তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তিনিও থিতু হতে পারেননি।

ইমরানকে সরিয়ে এরপর ক্ষমতায় আসেন নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফ। তার নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার জোর গলায় বলেছেন, ‘পাকিস্তান খেলাপি হবে না।’ তবে বর্তমান প্রেক্ষাপট তার দাবিকে সমর্থন করছে না।

ডন লিখেছে, পাকিস্তানের ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। বর্তমান অর্থনীতির সবদিক বিবেচনা করে পাকিস্তান ডিফল্টের (দেউলিয়া) খুব কাছাকাছি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। বিদেশি ঋণ কিছুটা এলেও সংকট দূর হচ্ছে না পাকিস্তানের।

এ অবস্থায় গত মাসে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আনোয়ারুল হক কাকার। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান দেশটির রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি।

সংবিধান অনুযায়ী, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নভেম্বরের শুরুর দিকে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত