অনলাইন ডেস্ক

১১ জুন, ২০১৬ ১৭:৪০

কাবুলে বাঙালি নারীকে অপহরণ

বছরখানেক ধরে কাবুলে কাজ করছিলেন। সমাজসেবাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। কলকাতার সেই মেয়ে জুডিথ ডিসুজাকে বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা কাবুলের রাস্তা থেকে অপহরণ করেছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার রাত পর্যন্ত তার কোনও খবর মেলেনি।

কোনও গোষ্ঠী বা জঙ্গি সংগঠন অপহরণের দায় স্বীকার না করায় পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে জটিল। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহের তির অবশ্য তালিবানের দিকেই। আফগানিস্তান সরকারের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, জুডিথকে ফিরিয়ে আনার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।

কলকাতায় জুডিথের বাড়ি এন্টালির কাছে, সিআইটি রোডে। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ সেখানেই ফোন করে দুঃসংবাদটা জানান কাবুলে ভারতীয় হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরা। এ দিন মনপ্রীত বলেন, ‘এখনই বলা সম্ভব নয় যে কারা অপহরণ করেছে। এলাকা জুড়ে তল্লাশি চলছে।’

আফগানিস্তানে এর আগে বেশ কিছু বিদেশিকে অপহরণ করেছে তালিবান। মার্চ মাসে জালালাবাদে ভারতীয় দূতাবাসে যে জঙ্গি-হানার ঘটনা ঘটে, তার পিছনেও তালিবানের হাত ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। তালিবানের হাতে এর আগে কোনও ভারতীয় নাগরিক অপহৃত হয়েছেন বলে মনে করতে পারেননি মনপ্রীত।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন জুডিথ। নিজের ফ্ল্যাটে ফেরার পথে শহরের মাঝখানে তৈমানি নামে একটি আবাসিক এলাকায় একটি গাড়ি এসে জুডিথের গাড়িকে দাঁড় করিয়ে দেয়। মনপ্রীতের কথায়, ‘জুডিথ ও তার গাড়িচালককে নামিয়ে জোর করে তুলে নেওয়া হয় ওই গাড়িতে। কিছু দূর গিয়ে গাড়িচালককে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে অপহরণকারীরা জুডিথকে নিয়ে পালায়।’

কলকাতায় যেমন বালিগঞ্জ অথবা আলিপুর অঞ্চল, উত্তর-পশ্চিম কাবুলের তৈমানি ঠিক তেমনই একটা জায়গা। অর্থাৎ শান্তিপূর্ণ আবাসিক এলাকা। ভারতীয় দূতাবাস সংলগ্ন ‘হাই সিকিউরিটি জোন’-এর থেকে অনেকটাই দূরে। সেখানে জুডিথকে কারা কেন অপহরণ করল, তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে চাননি মনপ্রীত। শুধু বলেন, ‘জুডিথ যে সংস্থার হয়ে কাজ করেন, তারাই খবরটা জানায়। পরে কাবুলের প্রশাসনও যোগাযোগ করে।’

জুডিথ যে সংস্থাটির হয়ে কাজ করতে কাবুলে গিয়েছিলেন, তার নাম আগা খান ফাউন্ডেশন। সেটি একটি আন্তর্জাতিক এনজিও— আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (একেডিএন)-এর শাখা সংস্থা। একেডিএন-এর চেয়ারম্যান আগা খান বংশানুক্রমিক ভাবে ইমাম হন ১৯৫৭ সালে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক ইতিহাসের এই স্নাতক বরাবরই সহিষ্ণুতা এবং সহমর্মিতার প্রচার করে এসেছেন। আফগানিস্তানে তার সংস্থার সঙ্গে স্বার্থের সংঘাত রয়েছে, এমন গোষ্ঠীর সংখ্যাও কম নয়। ফলে এই অপহরণ আগা খানকে সবক শেখানোর জন্য কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত