অনলাইন প্রতিবেদক

০৬ জুলাই, ২০১৬ ২৩:১৪

ক্ষমতা থাকলে সরকার পিস টিভি বন্ধ করে দেখাক : জাকির নায়েক

ঢাকায় হোলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার পর আলোচনার উঠে আসা ভারতীয় ইসলামি চিন্তাবিদ জাকির নায়েক ‘ইসলামিক স্টেট-আইএস’ এর সমালোচনা করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘আইএস’ এর কর্মকান্ডকে অনৈসলামিক বলে অভিহিত করেন।

এ সাক্ষাৎকারে তিনি ঢাকায় জঙ্গি হামলায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “ইসলামিক স্টেট নাম দিয়ে আমরা ইসলামেরই নিন্দা করছি...তারা ‘এন্টি-ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া’, যারা নিরীহ বিদেশিদের হত্যা করছে। এ নামটিও ইসলামের শত্রুদের দেয়া”।

গত ১ জুলাই শুক্রবার ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিসান বেকারিতে সংঘবদ্ধ জঙ্গি হামলার পর থেকে আবারও আলোচনায় আসেন এ ইসলামিক চিন্তাবিদ। হামলাকারীরা তার টুইটার ও তার মতাদর্শ অনুসরণ করতো বলে প্রচারিত হলে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্তের ইঙ্গিত দেয় ভারত সরকার। এছাড়াও বাংলাদেশ তথ্য প্রমাণ দিলে ও গুলশান হামলায় জাকির নায়েকের জড়িততা প্রমাণিত হলে তাকে ভারত থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলেও জানায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ঢাকা হামলায় নিহত জঙ্গিদের দুজন- রোহান ইমতিয়াজ এবং নিবরাস ইসলাম জাকির নায়েককে অনুসরণ করত। রোহান গত বছর জাকির নায়েকের পিস টিভির একটি অনুষ্ঠান তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিল।

৫০ বছর বয়সী জাকির নায়েক মুম্বাইয়ের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।  অন্য ধর্মকে নিয়ে মন্তব্য এবং ওসামা বিন লাদেনকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

২০১০ সালে এক প্রেস কনফারেন্সে জাকির নায়েকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো, যুক্তরাজ্য কেন তাকে নিষিদ্ধ করেছে। জবাবে তিনি জানান, সকল মুসলিমকে সন্ত্রাসী হওয়ার অনুপ্রেরণা দেওয়ার কারণে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমি মুসলিমদের বলেছিলাম, সকল মুসলিমের সন্ত্রাসী হওয়া প্রয়োজন। টেররিস্ট বা সন্ত্রাসী হলো সেই ব্যক্তি যে অন্যদের টেররাইজ বা ভীত সন্ত্রস্ত করতে পারে। যখন একজন ডাকাত পুলিশকে দেখে তখন সে ভয় পায়। সেকারণে একজন ডাকাতের জন্য পুলিশ একজন সন্ত্রাসী। সেদিক থেকে সব মুসলিমেরই ডাকাতের কাছে সন্ত্রাসী বলে বিবেচিত হওয়া প্রয়োজন।’

পিস টিভিতে সম্প্রচারিত জাকির নায়েকের এ বক্তব্যটি গত বছর ফেসবুকে শেয়ার করেছিল রোহান। এদিকে নিবরাস ইসলাম জাকির নায়েক ছাড়াও আনজেম চৌধুরী এবং শামী উইটনেসকে ২০১৪ সাল থেকে টুইটারে অনুসরণ করে আসছিল। শামী উইটনেস নামের টুইটারটি চালান ২৪ বছর বয়সী মেহেদি বিশ্বাস।  তাকে ২০১৪ সালে ভারত থেকে আটক করা হয়।  মেহেদি বিশ্বাসকে আইএসের টুইট একাউন্টের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার কারণে বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

এদিকে ভারতে জাকির নায়েক ও তার চ্যানেল পিস টিভিকে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ভারত সরকারের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন জাকির নায়েক। তিনি কার্যত সরকারকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাকে কোটি কোটি লোক চেনে। গুলশানের এই হামলাকারীরাও যদি আমাকে চেনে, তাতে অবাক হওয়ার কী আছে? ক্ষমতা থাকলে সরকার পিস টিভি বন্ধ করে দেখাক’।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত