লন্ডন সংবাদদাতা

০২ এপ্রিল, ২০১৫ ১৮:০২

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ইলেকশন ২০১৫ : কনজারভেটিভ নাকি লেবার পার্টি?

ব্রিটেনের ২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র আর মাত্র ৩৬দিন বাকি। আগামী ৭ মে ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশটির ৫৬তম সাধারণ নির্বাচন। নির্ধারিত হবে ক্ষমতাসীন ডেভিড ক্যামরন টেন ডাউনিং স্ট্রিটের প্রধানমন্ত্রী ভবনে বহাল থাকবেন নাকি আগমন ঘটবে প্রতিদন্ধি লেবার পার্টির এড মিলিব্যান্ডের। 

গত ৩১শে মার্চ পার্লামেন্ট ভেঙে দেবার মধ্যে দিয়ে শেষ হলো কনসারভেটিভ-লিবারেল ডেমোক্র্যাট কোয়ালিশন সরকারের মেয়াদ । প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইতিমধ্যেই সাক্ষাৎ করেছেন ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ এর সাথে । ধারণা করা হচ্ছে গত কয়েক দশকের মধ্যে এবারের নির্বাচনেই সবচাইতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে আর কখনোই ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে কে জিতবে তা অনুমান করা এত দুরূহ হয়ে ওঠে নি।

বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, জনপ্রিয়তার দৌড়ে দু দলই খুব সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে বা পিছিয়ে আছে।গত ২৬ মার্চ রাতে নির্বাচন-পূর্ববর্তী প্রথমবারের মতো টেলিভিশন পর্দায় লেবার পার্টি নেতা এড মিলিব্যান্ডের সঙ্গে সরাসরি প্রশ্নোত্তরে অংশ নিয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থান প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন ক্যামেরন। চ্যানেল ফোর ও স্কাই নিউজে সরাসরি সম্প্রচার হওয়া 'ব্যাটল ফর নাম্বার টেন' শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত উপস্থাপক জেরেমি প্যাক্সম্যানের কঠিন সব প্রশ্নের মুখোমুখি হন দু'জনই।

অনুষ্ঠান শেষে গার্ডিয়ান/আইসিএসের তাৎক্ষণিক জনমত জরিপে দেখা যায়, ৫৪ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাদের মতে এতে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের পারফরম্যান্স ছিল ভালো। বাকি ৪৬ শতাংশ উত্তরদাতা মত দেন, লেবার পার্টি নেতা এড মিলিব্যান্ডের পক্ষে।এর ফলে অনেক বিশ্লেষকই মনে করছেন, হয়তো কোন দলই এবার স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।

পূর্ব লন্ডনের অলিম্পিক পার্কে প্রচারযাত্রার উদ্বোধন করে মিলিব্যান্ড স্বীকার করেন, ৭ মের নির্বাচন হবে 'একটি প্রজন্মের সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সাধারণ নির্বাচন'। ক্ষমতায় গেলে মধ্য ও নিম্ন আয়ের ভোটারদের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, রক্ষণশীলদের শাসনামলে এ দুই শ্রেণী একেবারেই অবহেলিত। মিলিব্যান্ড জোর দিয়ে বলেন, 'টোরিরা বলছে, তারা যে শাসন দিচ্ছে সেটা ভালো; কিন্তু আমরা বলছি, ব্রিটেন এরচেয়ে অনেক ভালো কিছু করতে পারে।'

কনসারভেটিভ এবং লেবার পার্টি ছাড়াও আরো যে দলগুলো এ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে - তার মধ্যে আছে নিক ক্লেগের লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টি, নাতালি বেনেটের গ্রিন পার্টি, নাইজেল ফারাজের ইউকে ইনডিপেন্ডেন্স পার্টি, আর এ্যালেক্স স্যামন্ডের স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি। ৭ই মে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী কনসারভেটিভ পার্টির ডেভিড ক্যামেরন এবং প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড। ২ এপ্রিল ক্যামেরন, মিলিব্যান্ড ও লিব-ডেম নেতা নিক ক্লেগের মধ্যে হবে সরাসরি টেলিভিশন বিতর্ক অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে ইউকিপ, গ্রিন, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ও প্লেইড সিমরুর নেতারাও উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখ্য ভেঙ্গে দেয়া সংসদে লেবার পার্টি থেকে একমাত্র ব্রিটিশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সদস্য ছিলেন রোশনারা আলী। এবারই রেকর্ড সংখ্যক ১৩জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত