সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ জুন, ২০১৫ ০৪:৩৭

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু-কিশোর নিয়োগ বন্ধে জাতীয় নীতিমালা জরুরী : আইএলও

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)’র মহাসচিব গায় রাইডার বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু-কিশোর নিয়োগ ও কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি নিরসনে জাতীয় নীতিমালা থাকা জরুরী। 

শিশু শ্রম ২০১৫ ওয়ার্ল্ড রিপোর্টে আইএলও মহাসচিব বলেন, আমাদের নতুন প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, শিশু শ্রম নিরসন ও শিশু-কিশোরদের জন্য শালীন কাজের অভাব পূরণে একটি সুসঙ্গত জাতীয় নীতিমালা প্রয়োজন। শিশুদেও চাকরির ন্যুনতম বয়স পর্যন্ত স্কুলে ধরে রাখা এবং সারা জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যুনতম শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টিতে এটি জরুরী। কারণ এই শিক্ষাই তার ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। এসব শিশুদের মৌলিক জ্ঞান ও ভবিষ্যত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে এটাই একমাত্র পথ। 

শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আইএলও প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট অন চাইল্ড লেবার ২০১৫: পেভিং দ্য ওয়ে টু ডিসেন্ট ওয়ার্ক ফর ইয়ং পিপল’ প্রতিবেদনে গায় রাইডার বিশ্বব্যাপী শিশুশ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ পরামর্শ দেন। ১২ জুন ছিলো আন্তর্জাতিক শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস। 

আইএলও প্রতিবেদনে বলা হয়, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ শিশু ১৫ বছর বয়সের মধ্যে স্কুলের পড়ালেখা শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করে। 

শান্তির জন্য নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী এ প্রতিবেদনে শিশু শ্রম নিরসনে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যখন আমরা আমাদের ঔরসজাত সন্তানের জন্য ভাবি, তখন আশা করি তারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং অধ্যাপক হওয়ার জন্য জন্মেছে। সারা দুনিয়াটাই তাদের জন্য। কিন্তু যখন আমরা অন্য শিশুদের সম্পর্কে কথা বলি, তখন ভাবি ঠিক আছে, তারা গরীব শিশু, তারা কাজ করুক, আমরা তাদের একটু একটু সহায়তা করবো। আমাদের এ মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সব শিশুকেই আমাদের শিশু বলে বিবেচনা করতে হবে।” 

শিশু অধিকার কর্মী ভারতীয় নাগরিক কৈলাশ সত্যার্থি গত ১১ জুন জেনেভায় পক্ষকালব্যাপী শুরু হওয়া আইএলও’র ১০৪তম অধিবেশনে বক্তব্য দেন। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয় শিশু শ্রম বন্ধ এবং কিশোরদের জন্য শালীন চাকরি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দু’টি বাধা রয়েছে। ১২টি দেশে পরিচালিত জরিপে শিশু শ্রমের সাথে যুক্ত শিশু এবং ন্যুনতম শিক্ষা শেষ না করেই যারা স্কুল ত্যাগ করেছে তাদের ভবিষ্যতও কর্মসংস্থান অনিশ্চিত হয়ে পরে। তারা দক্ষতা ও শিক্ষার অভাবে পরবর্তীতেও ভালো চাকরির পায় না। 

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা তাড়াতাড়ি স্কুল ত্যাগ করেছে তারা নিরাপদ এবং স্থিতিশীল চাকরি পায় না। অনেক দেশেই ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা কাজ করে এবং তারা ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত একটি বিশেষ শ্রেণী হিসেবে চিহ্নিত। 

এই প্রতিবেদনে শিশুদের ন্যুনতম শিক্ষা নিশ্চিত করার পর একটি শালীন কাজে যোগ দেয়ার পরিস্থিতি তৈরি করতে হস্তক্ষেপ করার পরামর্শ দেয়া হয়। এতে ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৪৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে মেয়ে শিশু ও নারীদের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে বলা হয়।

আইএলও’র সাম্প্রতিকতম অনুমানে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১৬৮ মিলিয়ন শিশু শ্রমে যুক্ত এবং এদের মধ্যে ১২০ মিলিয়ন শিশুর বয়স ৫ থেকে ১৪ বছর। এ প্রতিবদনে এ বিষয়টির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। বাসস।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত