সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ আগস্ট, ২০১৫ ২১:১৬

চাপের মুখে পর্ন সাইটের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে ভারত

চাপের মুখে অবশেষে ৭০০টি পর্ন সাইটের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে ভারত। দেশ জুড়ে প্রবল জনমতের চাপে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক নোটিস জারি করে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে, চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইটের উপর এখনও এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে বলে ওই সূত্রটি জানাচ্ছে। মোট ৮৫৭টি পর্ন সাইটের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। (সূত্র : আনন্দবাজার)

সূত্রের খবর, আপাতত ১৫৭টি সাইটের উপর ওই নির্দেশ বহাল থাকতে পারে।

কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “তালিবানি সরকার বলে সমালোচকদের বেশ কয়েক জনের দাবিকে আমি খারিজ করছি। আমাদের সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে।”

দেশের ৮৫৭টি পর্ন সাইটের উপর ‘উধাও ফতোয়া’ জারি হওয়ার পর থেকেই রাষ্ট্র বনাম নাগরিকের অধিকার বিতর্কে গোটা দেশ তোলপাড়। তবে কি এখন নাগরিকের বেডরুমেও উঁকি দেবে রাষ্ট্র? একটা মত যদি এই হয়, বিপক্ষের যুক্তি ছিল, এই ফতোয়াতে নাকি ‘সমাজের ভাল’ হবে! তবে তাঁরাও প্রশ্ন করছেন, নাগরিকের ‘নৈতিক রক্ষাকর্তা’ হওয়ার দায়িত্ব কে বা কারা দিয়েছেন? এই সব নানান প্রশ্নে দেশ এখন দ্বিধাবিভক্ত। সম্প্রতি দেশের ৮৫৭টি পর্ন সাইট উধাও হয়েছে ইন্টারনেট থেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুরুগম্ভীর বিতর্ক থেকে হাল্কা আলোচনায় মুখর রাষ্ট্র। সেই কারণেই সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কোনও রকম সতর্কতা বা ব্যাখ্যা ছাড়াই গত সপ্তাহান্তে ‘ব্লক’ করা হয় পর্ন সাইটগুলি। সূত্রের খবর, এক ‘অ্যান্টি-পর্নোগ্রাফি অ্যাক্টিভিস্ট’-এর তালিকা মেনেই ওই নির্দিষ্ট সংখ্যার সাইটগুলিকে বন্ধ করা হয়। সরকারি নির্দেশ ছাড়া এ কাজ যে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি (আইএসপি) করবে না তা বোঝাই যাচ্ছে। তবে, তা স্পষ্ট ভাবেই বলতে নারাজ তারা। কারণ, এ নিয়ে ধোঁয়াশা স্পষ্ট করতে সরকারের তরফে কোনও রকম বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

যদিও সপ্তাহখানেক আগেই সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি এইচ এল দাত্তু তাঁর এক রায়ে স্পষ্ট বলেছিলেন, “নিজের বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে বসে এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পর্নোগ্রাফি দেখার মৌলিক অধিকার রয়েছে।”

সে মামলায় হার হয়েছিল আইনজীবী কমলেশ বাসওয়ানি-র। যদিও মঙ্গলবার তিনিই অবশ্য পর্ন সাইট বন্ধ করার জন্য প্রকাশ্যেই মোদী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টে ওই ৮৫৭টি সাইটের তালিকা তুলে দিয়েছিলেন কমলেশ স্বয়ং। আর, সূত্রের খবর ওই তালিকা তৈরির পিছনে হাত রয়েছে পিঙ্কি আনন্দের। বিজেপি-র হয়ে বহু মামলায় লড়া পিঙ্কি এখন মোদী সরকারের হয়ে বহু আইনি লড়াইয়ে নিযুক্ত। পিঙ্কিই নাকি টেলিকম ডিপার্টমেন্টকে ওই তালিকা তুলে দিয়েছিলেন।

স্বভাবতই, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়েছে সর্ব ক্ষেত্রে। কারও মতে, সাধারণ মানুষ অনলাইনে কী দেখবে তা নিয়ে কথা বলার সরকারের কোনও অধিকারই নেই। তবে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সরকার বিতর্কে কতটা জল ঢালতে পারবে সেটাই এখন দেখার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত