অনলাইন ডেস্ক

০৬ মে, ২০১৬ ০০:৪১

বিষয় যখন ডিম!

ডিম ভালোবাসে না এমন লোকের সংখ্যা খুব কম। ডিম নিয়ে মজার কিছু তথ্য পড়ুন।

মুরগির ডিমে তা দেওয়ার কৃত্রিম পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল মিসরীয়রা১. ডিমের নতুন দিনের শুরু মিসরে
খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ সালের কথা, মুরগির ডিমে কৃত্রিমভাবে তা দেওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল মিসরীয়রা। সে সময় ডিমে তা দেওয়া হতো গুহার ভেতরে। এর ফলে মুরগির সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল এবং সেই সঙ্গে মুরগির ডিমও। আর তাতে মিসরীয়দের খাদ্যের ভান্ডারে ডিমের অভাবও হয়নি কখনো। মিসরীয়রা ডিমকে পবিত্র বস্তু হিসেবে জানত। এ কারণে ডিম রেখে দেওয়া হতো উপাসনালয়ের ভেতরেও।

ডিমের অমলেটের চল শুরু রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকে২. অমলেটের শুরু রোমে
রোমান সাম্রাজ্যে ডিমের সঙ্গে মধু মিশিয়ে একটি খাবার বানানো হতো। তারা সেটার নাম দিয়েছিল ‘ওভেমেল’। বাংলা করলে যেটার অর্থ দাঁড়ায় ‘ডিম ও মধু’। কেউ কেউ বলেন, এই ‘ওভেমেল’ থেকেই ‘অমলটে’ শব্দের উৎপত্তি। আবার অনেকের মতে, ফরাসি শব্দ ‘অ্যামেলেট’ থেকেই এসেছে ‘অমলেট’। রোমানরা বিশ্বাস করত, ডিম সৌভাগ্যের প্রতীক। এ কারণে তারা ঘরের মেঝে সাজাত ডিমের খোলস দিয়ে।
৩. মুরগি কেন সারা বছর ডিম পাড়ে?
বুনো পাখিরা সারা বছর ডিম পাড়ে না। মুরগি কেন পাড়ে? এই অসম্ভবকে তারা সম্ভব করল কী করে? গবেষকেরা বলেন, থায়োরয়েড-স্টিমুলেটিং হরমোন রিসেপটর (টিএসএইচআর) নামের একটি জিন বছরের নির্দিষ্ট সময়ে বুনো পাখিদের ডিম পাড়ার বিষয়টি ঠিক করে দেয়। মুরগির মধ্যে এই জিনের প্রভাব পরিবর্তিত (মিউটেশন) হয়েছে। ফলে সারা বছর এরা ডিম পাড়ে। তাই মানুষের গৃহপালিত পাখির তালিকায় মুরগি আছে সবার ওপরে।

ডিম উৎপাদনে শীর্ষে চীন৪. ডিম উৎপাদনে শীর্ষে চীন
‘মেড ইন চায়না, বেশি দিন যায় না’! এটা নতুন একটা প্রবাদ। চীনের অনেক পণ্য নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে বলেই এমন প্রবাদের জন্ম। তবে একটি তথ্য আপনাকে ভাবাবে; বিশ্বের ৪০ শতাংশ ডিমের জোগান আসে ওই চীন থেকেই! ১৯৮৪ সালে ডিমের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়ে চীন উঠে গেছে শীর্ষে। তবে ওই যে চীনের বিরুদ্ধে ভোক্তার অভিযোগ এখানেও আছে। ডিমের এত বড় জোগান দিতে চীন কারখানায় ডিম তৈরিও করে! রেজিন, স্টার্চ এবং আরও কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি নকল ডিম এতটাই নিখুঁত যে বোঝার উপায় নেই কোনটা আসল, কোনটা ‘মেড ইন চায়না’!

৫. মার্কিনরা এত ডিম খায়!
যুক্তরাষ্ট্রের একেকজন প্রতিবছর গড়ে ২৫০টি ডিম খায়। সংখ্যাটা অনেক বেশি মনে হচ্ছে? তাহলে ৬০ বছর আগের হিসাবটা শুনুন। সে সময় মার্কিনরা বছরে জনপ্রতি গড়ে ৩৮৯টি ডিম পেটে চালান করত। এমন বিপুল চাহিদার অন্যতম কারণ হলো ডিম প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং সস্তা। তার চেয়ে বড় কারণ বোধ হয়, ডিম রাঁধতে বেশি কারিকুরির দরকার নেই।

মুরগির ডিমের রং মুরগির গায়ের রঙের সঙ্গে না-ও মিলতে পারে৬. ডিমের রঙের সূত্র
অনেকেই বলেন, মুরগির রং যেমন, ডিমের রংও তেমন হয়। যেমন আগাগোড়া সাদা রঙের লেগহর্ন মুরগির ডিমের রং সাদা। বাদামি ও লালের মিশেল রঙের বার্নেভেল্ডার জাতের মুরগি ডিম পাড়ে বাদামি রঙের। তবে ব্যতিক্রমও আছে অনেক। ফুটকিওয়ালা জলপাই রঙের কিছু মুরগি আছে, যেগুলোর ডিমের রং কিছুটা সবুজাভ। নানা রঙের অ্যামেরাউকানা নামের এক জাতের মুরগি আছে, যেগুলো ডিম দেয় হালকা নীল রঙের!
যুক্তরাষ্ট্রে ডিম পরিষ্কার করে বিক্রি করা হয়৭. যুক্তরাষ্ট্রে ডিম পরিষ্কার করা হয়
বাজার থেকে যে ডিম কেনা হয়, সেগুলো কোথায় থাকে? সোজা উত্তর, খোলা জায়গায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ডিম সংরক্ষণ করা হয় রেফ্রিজারেটরে। কারণ, মার্কিন মুলুকে বিক্রির আগে ডিম ধুয়ে-মুছে রাখা হয়। ডিমের ওপর একটা প্রাকৃতিক নিরাপত্তামূলক আস্তরণ থাকে; যা ডিমকে কক্ষ-তাপমাত্রায় ভালো রাখে। এর সঙ্গে অনেক ব্যাকটেরিয়াও অবশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। ডিম ধুয়ে ফেললে সেই আস্তরণ আর থাকে না। পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়া থেকেও মুক্ত থাকে। আর এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে ডিম ধুয়ে বিক্রির করার নিয়ম চালু হয়েছে।

৮. সবচেয়ে বড় ডিম
১৮৯৬ সালের কথা। যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ারে একটি মুরগি ডিম পেড়েছিল, যেটার ওজন ছিল ১২ আউন্স। পরিধির হিসেবে নয় ইঞ্চি। সেই রেকর্ডটা বহাল তবিয়তে ছিল ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে। ২০১০ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় যুক্তরাজ্যের এসেক্সবাসী হ্যারিয়েটের একটি মুরগি। ডিমটির পরিধি ছিল ৯ দশমিক ১ ইঞ্চি!

সূত্র: মেন্টালফ্লস

আপনার মন্তব্য

আলোচিত