সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ জুন, ২০২০ ১২:৪৩

কৃষি জমি ফেলে রাখলে অধিগ্রহণ করবে সরকার!

ব্যক্তি মালিকানার কৃষি জমিতে চাষাবাদ না করে ফেলে রাখলে সেটা সরকার অধিগ্রহণ করবে বলে এক গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। গত মাসের ৪ তারিখে এ সংক্রান্ত এক গণবিজ্ঞপ্তি জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী স্বাক্ষরিত এই গণবিজ্ঞপ্তিটি পটুয়াখালী জেলা তথ্য বাতায়নেও রয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কৃষি ও কৃষিজ জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কোন জমি পতিত রাখা যাবেনা। কৃষকদের সহায়তা প্রদানে জেলা প্রশাসন, পটুয়াখালী সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। কৃষি জমি পতিত রাখা আইনের চোখেও একটি অপরাধ। এরপরও যদি কোনো ব্যক্তি তার জমি কৃষিকাজে ব্যবহার না করে পতিত রাখেন তাহলে উক্ত জমি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ৯২(১) ধারা মোতাবেক খাসকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধরনের অনুষ্ঠানে তিনি কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের নির্দেশনাও দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কৃষিজ জমি ব্যবহারের ওপর জোর দিলেও অনাবাদি থাকলে সরকার অধিগ্রহণ করবে বলে কোন সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে আমলে নিয়ে কয়েকটি জেলা প্রশাসন নিজ এলাকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছে, আবাদি জমি ফেলে রাখলে তা খাসজমি হিসেবে খতিয়ানভুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হবে। একইধরনের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনও।

বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসেবে দেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৮৬ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমি আবাদযোগ্য হলেও পতিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে বিপুল পরিমাণ খাসজমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, কৃষি জমি হলে সেটি দীর্ঘদিন ফেলে রাখার অধিকার জমির মালিকের থাকে না। কেউ যদি কৃষিজমি অনাবাদি রাখে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ার আইন আছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা নানাভাবে সহায়তা করছি। এরপরেও মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে আইনের কথা উল্লেখ করে সচেতন করছি।

এদিকে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের গত ২০ মে দেওয়া এক অফিস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারা দেশে ১৪ জন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ১৪টি অঞ্চলে এ কার্যক্রম মনিটর করবেন। তাদের প্রধান কাজ হবে অধিক ফসল উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো জমি যেন পতিত না থাকে সে বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা দেখভাল করা।

ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, এমন কোনো নির্দেশনা তারাও দেননি। যদিও উচ্চপর্যায়ের এক সভায় বিষয়টি আলোচনায় এসেছিলো। অর্থাৎ কৃষি জমি ফেলে রাখলে সরকার নিয়ে নেবে - এমন সিদ্ধান্তটি কেন্দ্রীয়ভাবে কোথা থেকে এসেছে সেটি কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি।

তবে বেসরকারি সংস্থা এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, সরকারর হাতে অসংখ্য খাস জমি আছে সরকার সেগুলো অনেকদিন ধরেই কৃষিকাজের জন্য ভূমিহীনদের বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ করে রেখেছে কারণ এগুলো অন্য কাজে যেমন সরকারি প্রকল্প বা ইপিজেড এমন কাজে ব্যবহার করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত