সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ অক্টোবর, ২০২০ ১৫:১৭

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের ‘মাস্টারমাইন্ড’ গ্রেপ্তার

সরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের আরেক মাস্টারমাইন্ড আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল। সোমবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে কর্তৃপক্ষের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সন্ধান পায় সাইবার পুলিশ সেন্টার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এস এম সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় সাইবার পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম, সানোয়ারের তথ্যের সূত্র ধরে চলতি বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, জাকির হোসেন দিপু ও পারভেজ খানকে। এ সময়ে জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়। যা মেডিকেল ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়।’

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘২০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত আরো সাতজনকে গ্রেপ্তার করে সাইবার পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরেক মাস্টারমাইন্ড স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান আবদুস সালামের নাম।’

এস এম আশরাফুল আলম আরো বলেন, ‘মামলার খবর পেয়ে গা ঢাকা দেয় প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড আবদুস সালাম। গতকাল সোমবার রামপুরা বনশ্রী এলাকার জি ব্লকের একটি বাসায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আবদুস সালামকে। এর আগেও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের একটি মামলার আসামিও আবদুস সালাম। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইডি।’

বিজ্ঞাপন

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম জসিম সালামসহ অন্যান্য সদস্যদের অবৈধভাবে আয় করা সম্পদের খোঁজ শুরু করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ। ইতোমধ্যে জসিম উদ্দিনের ৩৮টি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে যাতে প্রায় ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। আর জসিমের স্ত্রী জেসমিন আরা শিল্পীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকার সন্ধার পেয়েছে সিআইডি। এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষ হলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা করবে সিআইডির সাইবার পুলিশ। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত পাঁচ থেকে ছয়জন চিকিৎসক এবং তিনটি কোচিং সেন্টারের সম্পৃক্ততা পেয়েছে সিআইডি।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে গত কয়েক বছরে সাইবার পুলিশ টানা অভিযান এবং আসামি গ্রেপ্তারের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে যে সব শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল পরীক্ষায় ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন তাদেরকে শনাক্ত করে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে সিআইডির সাইবার পুলিশ। এ মামলায় আবদুস সালামের ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে সিআইডি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত