সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ জানুয়ারি, ২০১৬ ২০:৪৪

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ সহ্য করা হবে না

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কারও কোনো কটাক্ষ সহ্য করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, একটি দলের নেত্রী ও তার নেতারা মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মাহুতি দেওয়া ৩০ লাখ শহীদের প্রতি কটাক্ষ করেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অপমান করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বর্তমান সরকারের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি একথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষকারী খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘৃণ্য বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

ইতিহাস বিকৃতকারীদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐকমত্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। যারা দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করবে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

দেশ যখন উন্নয়নের সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে তখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির দোসররা আবারও অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

কেউ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওয়াদা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, রায় কার্যকর করা হচ্ছে, কেউই বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

‘যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির আসল উদ্দেশ্য হলো জঙ্গিবাদ উসকে দেওয়া, যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারী, রাজাকার-আলবদরদের রক্ষা করা।

পৌর নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, গত সপ্তাহে শান্তিপূর্ণভাবে ২২৩টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এ নির্বাচন ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ।

‘নির্বাচনে আপনারা আপনাদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করেছেন, জঙ্গি ও পেট্রোল বোমাবাজদের প্রত্যাখ্যান করেছেন, সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সহ্য হয় না।

তিনি বলেন, দেশ যখন নানা সম্মানে ভূষিত হচ্ছে তখন বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্র রক্ষার নামে দেশ জুড়ে একাত্তরের মতো বর্বর হামলা চালিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সহ্য হয় না। সরকার ও জনগণের প্রতিরোধের ফলে ৯২ দিন পর বিএনপি নেত্রী নাকে খত দিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।

তিনি বলেন, যোগাযোগ খাতে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ চলছে। প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম নির্মাণ প্রকল্প পদ্মাসেতুর কাজ চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।

ঢাকায় হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোডে উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু, টঙ্গীতে, চট্টগ্রামে উড়াল সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। মগবাজার-মালিবাগ উড়ালসেতুর নির্মাণ কাজ অচিরেই শেষ হবে। এছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের কাজ দ্রুতই উদ্বোধন করা হবে।

তিনি বলেন, বতমান সরকার বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষ্যে দেশে ১০০ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করতে পেরেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৪ হাজার ৭৭ মেগাওয়াট। ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। ২০১৫ সালে গ্যাস উৎপাদন গড়ে দৈনিক ২ হাজার ৭২৮ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত