সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ জুন, ২০১৭ ০১:৫১

বাজেটে সমস্যা থাকলে সমাধান হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো সমস্যা থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট আমরা দিয়েছি। এই বাজেট নিয়ে অনেক আলোচনা চলছে। বাজেটে কারও কোনো সমস্যা থাকলে সংসদে আলোচনা হবে। আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করা হবে।'
 
এ ছাড়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
 
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন' (বিএফইউজে) ও 'ঢাকা সাংবাদিক ইউয়িনের' (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
 
আওয়ামী লীগ সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই—বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
তিনি বলেন, 'বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে নাকি মাটি নেই! ১৯৪৯ সালে এদেশের মাটি ও মানুষের মধ্যে দিয়ে, জনগণের অধিকার আদায়ের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগের জন্ম। আওয়ামী লীগের শিকড় এদেশের মাটির অনেক গভীরে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলের জন্ম সেই দলের (বিএনপি) পায়ের নিচে মাটি থাকে না, সেটিই হলো বাস্তবতা।'
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগ কেবল দেশের স্বাধীনতাই নয়, মাতৃভাষা বাংলার অধিকার এনে দিয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগ কোনো অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে জন্ম হওয়া রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামী লীগের যখন জন্ম, তখন অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এদেশে ছিল না। বিএনপির জন্মই অবৈধ। সংবিধান লঙ্ঘন করে প্রথমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল এবং ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক দলই হচ্ছে বিএনপি। এদেশের মাটি ও মানুষের মধ্যে থেকে এ দলটির জন্ম হয়নি।'
 
তিনি বলেন, 'জঙ্গি-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে আমাদের যে অভিযান চলছে, তা অব্যাহত থাকবে। আর যারা আন্দোলনের নামে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যার হুকুম দিয়েছে—বাংলার মাটিতেই তাদের বিচার করা হবে। কেউ-ই রেহাই পাবে না।'
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু তার জীবন সাংবাদিকতা দিয়ে শুরু করেছিলেন। আমি সবসময় দাবি করি, আমি আপনাদেরই পরিবারের একজন।'
 
সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের কল্যাণে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ফান্ড গঠন করে দিয়েছি। ৭ কোটি টাকার সিড মানি দিয়েছি। তথ্য অধিকার আইন করে দিয়েছি। সংবাদপত্রকে সেবা শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আগে মামলা হলেই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হতো। কিন্তু মামলা হলেই যেন সংবাদপত্রের মালিক-সাংবাদিকদের গ্রেফতার করতে না পারে সেজন্য আইন সংশোধন করেছি। এর ফলে গ্রেফতার নয়, সমন দেয়া হবে। আর আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য জমির ব্যবস্থার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। আর উত্তরায় রাজউকের ফ্লাটের কিছু রাখতে বলেছি, সেখান থেকে দীর্ঘমেয়াদি কিস্তি দিয়ে সাংবাদিকরা ফ্লাটের মালিক হতে পারবেন।'
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে না। এ কারণেই সংবাদপত্র ও টকশোগুেলোতে ইচ্ছেমেতা সরকারের সমালোচনা হলেও সরকার বাধা দেয় না। তবে নীতিহীন সাংবাদিকতা কিংবা হলুদ সাংবাদিকতা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
 
বঙ্গবন্ধুর একটি উদ্বৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন—নীতিহীন রাজনীতি দেশ ও জাতিকে কিছু দিতে পারে না। তেমনি নীতিহীন সাংবাদিকতা দেশের কোনো কল্যাণ করতে পারে না, বরং অনেক ক্ষেত্রে দেশ, সমাজ ও মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অনেক সময় নানা রকম সমস্যাও সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।'
 
নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা সংক্রান্ত সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তার ইতিবাচক অবস্থান তুলে ধরে বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করেছি। কিন্তু মালিকপক্ষ থেকে তাদের প্রতিনিধির নাম না দেওয়ায় এই প্রক্রিয়া আটকে আছে। এখানে সরকারের কোন দোষ নেই, মালিকদেরই দোষ। এখানে অনেক গণমাধ্যম মালিক রয়েছেন। আপনাদের বলবো, আপনারা প্রতিনিধি দিন। প্রতিনিধি পেলেই আমরা ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করবো। আর ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকেও একটি নীতিমালাসহ এই নবম ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনতে হবে।'
 
সব সংবাদপত্রে ওয়েজবোর্ড যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত