সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ জুন, ২০১৭ ২১:৫৪

হেফাজতের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান নাগরিক সমাজের

সরকারের একাংশের আশ্রয় প্রশ্রয়ের কারণে বায়তুল মোকাররমের মতো পবিত্র জাতীয় মসজিদ এবং মসজিদের গেট ব্যবহার করে মিথ্যাচার-তথ্য বিকৃতি চালিয়ে যাচ্ছে হেফাজত এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানোর মতো রাষ্ট্রীয় চেতনাবিরোধী কাজে লিপ্ত থাকার দুঃসাহস দেখাচ্ছে এমন অভিযোগ তুলেছে নাগরিক সমাজ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয় যেন দেশের কোনো মসজিদে অবস্থান করে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি কেউ না দিতে পারে। সে লক্ষ্যে সরকারকে কঠোর ভূমিকা পালনের দাবি জানানো হয়।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, হেফাজতের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সবাইকে মাঠে নামতে হবে। হেফাজতের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ সকল বাম সংগঠনকে একত্রে রাজপথে নামতে হবে।

হেফাজতের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নেই। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বুদ্ধিভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করেন প্রবীণ এ শিক্ষক।

অজয় রায় বলেন, কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভুল সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের পর তারা আস্কারা পেয়েছে। কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি বাতিল করতে হবে। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তকে সংশোধন করা হয়েছে। যা জাতির জন্য ভয়ানক সিদ্ধান্ত।

শহীদ বুদ্ধিজীবী সন্তান আসিফ মনির বলেন, জামায়াত আর হেফাজত একই রকমের ধর্মভিত্তিক সংগঠন। তাদের বিরুদ্ধে এখনই ঐক্যবদ্ধভাবে না দাঁড়ালে আগামীতে হেফাজতের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উঠবে।

এ সময় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, হেফাজত দেশবিরোধী এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের ১৩ দফা ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর শুরু হয়েছে। তারা ২০১৩ সালে যে তাণ্ডব করেছে তার বিচার এখনও শুরু হয়নি।

শাহরিয়ার কবির প্রশ্ন রেখে বলেন, হেফাযতের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো কোথায় গেল? সুপ্রিম কোর্টকে হুমকি দাতাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, আমরা এখন অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছি। সরকার ১৩ সালেও বলেছিল হেফাজত মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আজ তাদের সঙ্গে হেফাজতের সখ্যতা।

তিনি বলেন, এখন বিএনপি সরকার হলে আমাদের ভাষার পরিবর্তন হতো। এখন আমরা ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলছি। আজ মুক্তিযুদ্ধের মুল চেতনা হুমকির মুখে। বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়তে আমাদের দৌড় প্রেসক্লাব পর্যন্ত।

নারায়ণগঞ্জের ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেন, দেশে এখন দুর্বৃত্তের রক্ষার রাজনীতি চলছে। ভোটের রাজনীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে গিলে খাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিতে রাষ্ট্র ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত-হেফাজতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।

সভার শুরুতে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের সঙ্গে হেফাজত নেতার কথোপকথনের সেই টকশো দেখানো হয়।

অজয় রায়ের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, নাট্যব্যক্তি হাসান ইমাম, সারা জাকেরসহ মানবাধিকার ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত