সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৯:১৩

রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা মামলায় প্রকৌশলী রিমান্ডে

ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রকৌশলী ফজলার রহমানের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রংপুরের বিচারিক হাকিম কামরুল হাসানের আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। আসামি ফজলার রহমান রংপুর জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী। এ ঘটনায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলার তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই ফেরদৌস আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ফজলারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার বিচারিক হাকিম কামরুল হাসানের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গঙ্গচড়া থানায় দায়ের করা অপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিস্টার আলী সাংবাদিকদের জানান, গঙ্গচড়া থানার মামলায় রোববার বিচারিক হাকিম আরিফুল ইসলামের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বুধবার ফজলারকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ।

ফজলার রহমানের বাড়ি ঠাকুরপাড়ার পাশের গ্রাম মমিনপুরে। হামলায় পাঁচ ইন্ধনদাতার মধ্যে তিনি একজন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ১০ নভেম্বর কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ ঠাকুরপাড়ায় হামলা চালিয়ে নয়টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক হামলাকারী নিহত এবং সাত পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়।

এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। দুটি মামলায় ১৫৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন প্রকৌশলী ফজলার। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলী থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ফজলারের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনায় জনবল ও অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তদন্তে তা প্রমাণিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আরও চারজন ইন্ধনদাতা শনাক্ত করা হয়। তারা হলেন- জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সভাপতি মাওলানা ইনামুল হক মাজেদি, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ রানা, সদরের খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম এবং খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য মাওলানা মোস্তাইন বিল্লাহ।

এদের মধ্যে ঘটনার পরদিন জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি বিশেষ টিম কাজ করছে বলে এসপি মিজানুর জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত