সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ মে, ২০১৮ ১৯:৪৭

পুরুষ অধিকার আন্দোলন শুরু হলে পাশে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি: ফোকাস বাংলা

ভবিষ্যতে পুরুষ অধিকার আন্দোলন শুরু হবার সম্ভাবনার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকারের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এসব কথা জানান। তবে ওই ধরনের কোনও আন্দোলন হলে তিনি পুরুষদের পক্ষেও থাকবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (২ মে) গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে সংবাদ সম্মেলনে হাসির রোল উঠে।

এসময় নারীসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু আইন করে আর জোর জবরদস্তি করে নারীর ক্ষমতায়ন হবে না। অনুশীলন আর কাজের মধ্য দিয়েই নারীর ক্ষমতায়ন ফিরে আসবে। আমরা দাবি করতেই থাকবো, আবার নারীদের জন্য সব আলাদা আলাদা চাইবো, তাহলে আমরা শক্তিটা দেখাবো কীভাবে।’

মনের জোর ও আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনও কিছু অর্জন করা যেতে পারে, তা বিশ্বাস করি। আমি একজন নারী হয়েও বলছি— নারীর ক্ষমতায়নের জন্য শুধু চিল্লালেই হবে না, অধিকার  নিজেদের অর্জন করেও নিতে হবে। অবশ্য ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যাবে, পুরুষ অধিকার আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। তখন আমি তাদের সঙ্গেই থাকবো অসুবিধা নেই।’

এর আগে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তার প্রশ্নে বাংলাদেশের নারীদের পদে পদে ‘বাধার সম্মুখীন ও পুরুষদের নেতিবাচক‘ দৃষ্টিভঙ্গির উত্তরণে সরকার উদ্যোগী হবে কিনা তা জানতে চান।

এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়ে নানা বাধার কথা তুলে ধরেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য নির্বাচন, প্রমিলা ফুটবল টিম চালু করতে গিয়ে যেসব বাধার মুখোমুখি হয়েছিলেন তা উল্লেখ করেন। উল্লেখ করেন, তিনি নারী হয়ে রাজনীতিতে এসে যে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন তার কথা। তিনি বলেন, ‘এসব বাধা নারীকেই আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা নিয়ে মোকাবিলা করতে হয়।’

আমাদের দেশের সমাজ একসময় খুবই রক্ষণশীল ছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারীর প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হচ্ছে, এই দৃষ্টিভঙ্গি তো নির্ভর করে। আমি যখন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেয়েদের সংরক্ষিত আসন করে দেই। তখন তারা অংশগ্রহণ করবে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। জামায়াতসহ অনেক রাজনৈতিক দল থেকে তীব্র প্রতিবাদ এসেছিল। প্রার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকেও বাধা এসেছিল। তবে আমি জানতাম একবার শুরু করা হলে, আজ যারা বাধা দিচ্ছে, কালই তারা পক্ষে নামবে। পরে নির্বাচনের সময় দেখেছিলাম, যে শ্বশুর-ভাসুর বিরোধিতা করেছিল তারাই কুপি বাতি নিয়ে পাটখড়িতে আগুন দিয়ে মশাল জ্বালিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছেন। পরিবর্তনটা একবারেই আসে না। প্রমিলা ফুটবল টিম করতে গিয়েও এ ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সফরে অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসাও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত