সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ আগস্ট, ২০১৮ ২১:৩৬

কয়লা চুরি হয়নি, ‘সিস্টেম লস’: সাবেক এমডি

'কয়লা নিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি। চুরি, উধাও বা খোলাবাজারে বিক্রির যেসব কথা বলা হচ্ছে, তার পুরোটাই আসলে সিস্টেম লস হয়েছে। প্রকৃত তদন্তে এই সত্য বেরিয়ে আসবে।'

বুধবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিব উদ্দিন আহমেদ।

তিনি আরও বলেন, যেটুকু কয়লা গায়েব হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, সেটুকু প্রকৃত অর্থে সিস্টেম লস। আমাদের এখানে যেটুকু কয়লা উবে গেছে, তার পরিমাণ ১ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হবে না, অথচ আন্তর্জাতিকভাবে ২ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস গ্রহণযোগ্য।

এর আগে মজুদ কয়লা থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন অবৈধভাবে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় বুধবার  সকালে সাবেক এই এমডিসহ আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম।

এদিন সকাল থেকে দুদকের উপপরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামসুল আলম এ জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

তারা হলেন- সদ্য সাবেক এমডি হাবিবউদ্দিন আহমদ, সাবেক দুই কোম্পানি সচিব আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও মোশারফ হোসেন সরকার, মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) জাহিদুল ইসলাম ও উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক।

একই মামলায় মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী, উপমহাব্যবস্থাপক একেএম খালেদুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) মোরশেদুজ্জামান, উপব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহেদুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান ও উপমহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অপারেশন) জোবায়ের আলীকে।

১৬ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় উপমহাব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড কন্টাক্ট ম্যানেজমেন্ট) মো. নাজমুল হক, ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. শোয়েবুর রহমান, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. সাইদ মাসুদ, উপব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. মাহাবুব হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. মনিরুজ্জামান, সহকারী ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. মাহাবুব রশিদ ও ব্যবস্থাপক (স্টোর) মো. দিদারুল কবিরকে।

১৩ আগস্ট উল্লিখিত কর্মকর্তাসহ ৩২ জনকে তলব করে চিঠি দেয় দুদক। বাকি সাতজনকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) মো. খলিলুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী ও গোপাল চন্দ্র সাহা, ব্যবস্থাপক (হিসাব) সারোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপক (সেলস ও রেভিনিউ কালেকশন) মো. কামরুল হাসান, উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও কাস্টমার সার্ভিসেস) মোহাম্মদ নোমান প্রধানিয়া, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম সিরাজুল ইসলাম ও শরিফুল আলম এবং সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) আল আমিনকে।

চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাবেক চার এমডি এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, আমিনুজ্জামান ও মিজানুর রহমান এবং মহাব্যবস্থাপক (সারফেস অপারেশন) সাইফুল ইসলাম সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

কয়লা লোপাটের ঘটনায় গত ২৭ জুলাই রাতে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে খনির এক লাখ ৪৫ হাজার টন কয়লা গায়েবের অভিযোগ আনা হয়।

মামলার তদন্তের ভার পড়ে দুদকের ওপর। এরই ধারাবাহিকতায় মামলার ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ২১ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার জন্য পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয় দুদক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত