সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২৩:২৫

বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলনে সীমান্তে হত্যা নিয়ে দুই মত

সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হতাহতের ঘটনা এখনও শূন্যের কোঠায় নেমে না আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। অপরদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী কে কে শর্মা দাবি করেছেন, চলতি বছর সীমান্তে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। সীমান্তে হতাহতের ঘটনা এড়াতে বিএসএফ প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করছে।

ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ৪৭তম সীমান্ত সম্মেলনে তারা এমন মন্তব্য করেন।

দিল্লিতে ছয় দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শেষে শুক্রবার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন বিজিবি ও বিএসএফ মহাপরিচালক। এ সময় উভয় মহাপরিচালক যশোর সীমান্তে 'অপরাধমুক্ত অঞ্চলে'র কার্যকারিতার প্রশংসা করেন এবং অন্যান্য সীমান্তে পর্যায়ক্রমে এমন অঞ্চল ঘোষণায় নীতিগত সম্মতি দেন।

সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এবং বিএসএফ মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে।

এদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে মৃত্যু না হওয়ার দাবি করলেও বাংলাদেশের একাধিক মানবাধিকার সংস্থার তথ্যমতে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, সশস্ত্র সীমান্ত অপরাধীদের বিপজ্জনক আক্রমণের শিকার হয়েও বিএসএফ সর্বোচ্চ সহিষ্ণুতা প্রদর্শন ও ন্যুনতম শক্তি প্রয়োগের নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম বন্ধসহ প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে হতাহতের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।

বিজিবি মহাপরিচালক সাফিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ক্রমেই উন্নত হচ্ছে, জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়েছে। তাই ব্যাপকহারে দেশত্যাগের ঘটনা আর ঘটে না। সীমান্তের দু'পাশে একই পরিবারের মানুষের বাস। তাই পারিবারিক অনুষ্ঠানে তারা যাওয়া-আসা করেন। গরু পাচারের ঘটনাও অনেক কমে গেছে।

বিএসএফ মহাপরিচালক জানান, চলতি বছরে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের সময় বাংলাদেশের ১ হাজার ৫২২ নাগরিককে আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬৬ জন ভুলবশত ভারতে ঢুকে পড়ে। আবার কেউ পাচারের শিকার। কে পাচারকারী আর কারা পাচারের শিকার তা বোঝার জন্য সীমান্তরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

বিএসএফ মহাপরিচালক ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যদের খুঁজে পেতে সহায়তার জন্য বিজিবিসহ বাংলাদেশের অন্যান্য সংস্থার প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো গোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই উল্লেখ করে বিজিবি মহাপরিচালক জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ কখনই তার ভূমি অন্য দেশের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহারের সুযোগ দেয় না।

বিএসএফ মহাপরিচালক ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচার রোধে সহযোগিতার জন্য বিজিবিসহ বাংলাদেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রশংসা করেন। উভয়পক্ষই মাদক, অস্ত্র, স্বর্ণ পাচারসহ সব ধরনের চোরাচালান বন্ধে যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পাচারের শিকার নাগরিকদের উদ্ধার এবং তাদের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ মোহসিন রেজা দিল্লি থেকে জানান, দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সম্মেলন ২০১৯ সালের মার্চ বা এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত