সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ এপ্রিল, ২০২০ ২২:২৮

গণস্বাস্থ্যের কিট: আমলাতান্ত্রিকতাকে দুষলেন জাফরুল্লাহ

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পুরনো ছবি

গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস সংক্রান্তকরণ কিট নিয়ে আমলাতান্ত্রিকতাকে দুষলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ওই কিট পরীক্ষার জন্য ওষুধ প্রশাসন নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তার অভিযোগ, তারা আমাদের বলেছে এটার অনুমোদন নেই বলে আমরা গ্রহণ করতে পারছি না। আপনাদের কন্টাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশনের মাধ্যম হয়ে আসতে হবে। দেখেন কী আমলাতান্ত্রিকতা!

রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকালে ধানমন্ডি ১৪/ই রোডে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন গতকাল (শনিবার) আমরা করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট হস্তান্তরের একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম এটা অনুমোদনের জন্য। আর তা করার দায়িত্ব হচ্ছে ওষুধ প্রশাসনের। দুর্ভাগ্য, ওষুধ প্রশাসন এমন লোকের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, যারা না ফার্মাসিস্ট, না ফার্মাকোলজিস্ট। যার ফলে তারা এই জিনিসগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম হচ্ছে না। তারা সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক স্বার্থ দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। সেখানে জনগণের কোনও স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না। ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি করা ছাড়া তাদের ঘুম ভাঙে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতিতে আমি ছিলাম। সেখানে বলেছিলাম যে ওষুধের মূল্য সরকার নির্ধারণ করবে, তবে কোম্পানিকে লাভ দিয়ে। কিন্তু কালে-কালে এখানে কোম্পানির স্বার্থটাই বড় হয়ে গেছে। ঠিক গণস্বাস্থ্যের কিট ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট ইমিউনোঅ্যাসি’র ক্ষেত্রেও তারা একই ঘাপলাটা করেছে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা কিটের উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীলসহ তিন জন এটি জমা দিতে যান। তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর তা গ্রহণ করেনি। এমনকি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিন জনের একজনকে ওষুধ প্রশাসন কার্যালয়ে প্রবেশও করতে দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা ওষুধ প্রশাসনকে বলেছি, আপনার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে লিখে দেন এই কিটগুলো পরীক্ষা করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা বলে সেটা করতে পারবে না। আমি বলতে চাই, সরকারি খরচের জন্য যা টাকা লাগে দেবো। তবে কোনও ঘুষ দিতে পারবো না। কোনও ব্যবসায়ীকে টাকা দিতে পারবো না। এতে আমাদের কিট অনুমোদন হোক বা না হোক।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, গত ৪৮ বছরে গণস্বাস্থ্য কাউকে ঘুষ দেয়নি, দেবেও না। গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত কিট (ব্যবহারযোগ্য হয়ে) আসুক আর না আসুক, কাউকে ঘুষ দেবো না। কিন্তু, লড়াই করে যাবো।

তার অভিযোগ, সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ব্যবসায়িক স্বার্থে জাতীয় স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে গণস্বাস্থ্যের (করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ) কিট গ্রহণ করেনি সরকার। আমরা জনগণের স্বার্থে শুধু সরকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে কিটটি কার্যকর কিনা, তা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারিভাবে প্রতি পদে পদে পায়ে শেকল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জাফরুল্লাহ বলেন, আমি একটা জিনিস তৈরি করেছি। এটা ভালো কী মন্দ দেখার দরকার সেই ব্যক্তির, যার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আর সেটা ঠিক করা উচিত ওষুধ প্রশাসনের। সেটা আমরা তাদের বোঝাতে পারছি না। তারা বলছে, সিআরও মাধ্যমে করার। আমি যদি তাদের টাকা দিয়ে সেটা করাই, তাহলে আমার টাকা খেয়ে কেউ কী বলবে এটা খারাপ?

করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট ইমিউনোঅ্যাসি’ কিট তৈরির জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষক দলের সদস্য ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, দেশে এখনও করোনা শনাক্তকরণ কিটের কোনও নীতিমালা নেই। আর এমন জরুরি অবস্থায় তার দরকারও নেই। এরমধ্যেও যত প্রকারের ডকুমেন্ট চেয়েছেন সব জমা দিয়েছি। যতগুলো কাজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করতে বলেছে আমরা তা ধাপে ধাপে করেছি। তারা আজকে যখন সিআরও’র কথা বলছেন তখন সেটা আপনারা করবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত