সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১১:৪৪

জয়ের আশা আইভীর

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। জনতার রায় নৌকার পক্ষে যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচন মানেই ফাইট। আমি ফাইট করেই জিতব। জনতার রায়ে যেমন নৌকার জয় হবে, তেমনি নৌকার জয়ে জয় হবে জনতার।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার পর শহরের শিশুবাগ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন আইভী। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

আইভী বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। তিনি আরও কেন্দ্র ঘুরবেন। নির্বাচনের ফল যা-ই হোক, মেনে নেবেন।

সেলিনা হায়াৎ আইভী ভোট দেওয়ার উদ্দেশে সকালে বাসা থেকে বের হন। নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের আলী আহামাদ চুনকা সড়কের ১৭৯/২ নম্বর বাড়ি থেকে বের হয়ে মাজার জিয়ারত করে ভোট দিতে যান তিনি।

ভোটকেন্দ্র থেকে বের হয়ে কেন্দ্র কেন্দ্রে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান আইভী। তিনি আরও বলেন, আমি কনফিডেন্ট নারায়ণগঞ্জ এর মানুষ আমাকে ভোট দেবে। আমি আশা করি, কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটবে না। দিনভর যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী যেভাবে সক্রিয় রয়েছে, তা যে শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা) এবং বিএনপি মনোনীত অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের (ধানের শীষ) মধ্যে। এ ছাড়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থীও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থীরা।

মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং ২৭ কাউন্সিলর নির্বাচনের। ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৮ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ১৫৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। নির্বাচনে সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দশ হাজার সদস্য থাকছেন। ভোটের দিন বৃহস্পতিবার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ জন ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১৭৪টি। এর মধ্যে ৪টি অস্থায়ী কেন্দ্র। বুথের সংখ্যা ১ হাজার ৩০৪টি। নিয়োগ দেয়া হয়েছে চার হাজারের বেশি নির্বাচন কর্মকর্তা।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আইভীর বাবা আলী আহমদ চুনকা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান। ১৯৬৬ সালের ৫ জুন জন্ম নেওয়া আইভী একজন চিকিৎসক। আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের নারায়ণগঞ্জ শাখার আহ্বায়ক তিনি। ১৯৯২ সালে রাশিয়ার ওডেসা পিগারভ মেডিকেল ইন্সটিটিউটে ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি) ডিগ্রি নেওয়ার পর মিটফোর্ড হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করেন আইভী। এরপর ১৯৯৪ সাল থেকে এক বছর নারায়ণগঞ্জের ২০০ শয্যা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পর উচ্চতর পড়াশোনা করতে আইভী যান নিউজিল্যান্ডে।

সেখান থেকে ২০০২ সালে ফিরে পরের বছর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে প্রথম নারী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তিনি। নগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করা আইভী এখন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আইভী ও তার স্বামী কাজী আহসান হায়াতের দু’টি ছেলে রয়েছে।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত