সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১১:৪৭

নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জনরায় মেনে নেবেন সাখাওয়াত

ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে জনগণ যে রায় দেয় তা মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান।

বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের আদর্শ স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আশা করছি, সরকার এমন কিছু করবে না, যাতে মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। তবে মাঝপথে সরে দাঁড়াব না।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত খারাপ খবর পাইনি। ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে জনগণ যে রায় দেবে তা মেনে নেব।

বহুল প্রতীক্ষিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়।

স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনটি দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের মর্যাদার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন কোনও সিটি মেয়র।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এর মধ্য দিয়েই নগরীর পৌনে পাঁচ লাখ ভোটার তাদের রায় ঘোষণা করবেন।

মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী জনরায় পেলে টানা তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জের মেয়র হিসেবে বিজয়ী হবেন। অন্যদিকে, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন খান প্রথমবারের মতো জয়ী হলে আইনজীবী নেতা থেকে রাজনৈতিক নেতায় উত্তরণ ঘটবে তার।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা) এবং বিএনপি মনোনীত অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের (ধানের শীষ) মধ্যে। এ ছাড়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থীও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থীরা।

মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং ২৭ কাউন্সিলর নির্বাচনের। ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৮ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ১৫৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। নির্বাচনে সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দশ হাজার সদস্য থাকছেন। ভোটের দিন বৃহস্পতিবার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ জন ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১৭৪টি। এর মধ্যে ৪টি অস্থায়ী কেন্দ্র। বুথের সংখ্যা ১ হাজার ৩০৪টি। নিয়োগ দেয়া হয়েছে চার হাজারের বেশি নির্বাচন কর্মকর্তা।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পেশায় আইনজীবী সাখাওয়াতের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে হলেও অনেক দিন ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। ১৯৬৯ সালের ২০ অগাস্ট জন্ম নেওয়া সাখাওয়াত ১৯৯৫ সালের ১ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলা বারে তালিকাভুক্ত হন। স্থায়ীভাবে বসত গড়েন নগরীর জামতলা এলাকায়। ২০০৬-০৭ সালে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তিনি জেলা বারে সভাপতি ছিলেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে সাত খুনের ঘটনায় সরব হয়ে পরিচিতি পান সাখাওয়াত।

১৯৯৮ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য হন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-আইন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত