সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ১৮:৪৮

সংসদ ভেঙ্গে সহায়ক সরকারের দাবি বিএনপির

বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে সহায়ক সরকারে অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থার করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপ শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামী আলমগীর এ দাবির কথা জানান।

এর আগে রোববার সকাল ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা এ সংলাপ স্থায়ী হয়।

মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি যোগ দেন। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

পরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করতে চায়, নির্বাচন কমিশনের এ সংলাপ যেন নিছক লোক দেখানো কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে না। এটা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।’

সংলাপের ব্যাপারে আশাবাদী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সহায়ক সরকার, আরপিও সংশোধনসহ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব ইসির কাছে তুলে ধরা হয়েছে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে ২০ দফা লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সক্রিয় বিবেচনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছি।’

উল্লেখযোগ্য প্রস্তবনাগুলো হলো- নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকার নিশ্চিত করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, ১/১১ এর আমলে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, গুম-খুন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে, সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা-সমাবেশ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কার্যকর সংলাপের উদ্যোগ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার করা যাবে না, সব দলের জন্য এখন থেকে সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরি করতে হবে, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের অন্তত সাত দিন আগে থেকে মোতায়েন করতে হবে, সিইসি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিলে হবে না, পুরো ইসি বসে সিদ্ধান্ত নেবে এবং ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে।

এছাড়া ২০০৮ সালের পূর্বে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আসনসমূহের যে সীমানা ছিল সেই আসন সীমানা পুনর্বহালেরও দাবি জানায় বিএনপি।

এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশনের খুব বেশি কিছু করার নেই। তারপরও এই সংলাপের পর বিএনপি কিছুটা আশাবাদী তো বটেই।’

তিনি বলেন, ‘সংলাপে আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও তাদের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছে। তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ আয়োজন ও সহায়ক সরকারের যে দাবির কথা তাদের বলেছি, সেই ব্যাপারে কমিশন তাদের ক্ষমতার মধ্য থেকে কিছু করার চেষ্টা করবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

বিএনপি ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের তালিকা দিলেও ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিঞা, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এএসএম আবদুল হালিম, মো. ইসমাইল জবি উল্লাহ, আবদুর রশীদ সরকার ও সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। শুধু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার উপস্থিত হতে পারেননি।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-সংক্রান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের পর ৩০ জুলাই প্রথম ধাপে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, দ্বিতীয় ধাপে ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন।

তৃতীয় ধাপে ২৪ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়। আগামী ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসি সংলাপ করবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত