সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ জুন, ২০১৫ ১৮:৩২

মোদী-খালেদা বৈঠক : ‘সুন্দর’ আলোচনায় ‘গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি’ নিয়ে কথা

অবশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত হলো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। নানা জটিলতার পর আজ দুই দেশের এই দুই নেতা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন।

বৈঠকের পর খালেদা জিয়া জানিয়েছেন তাদের মধ্যে ‘সুন্দর’ আলোচনা হয়েছে। আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে।

রোববার বিকেলে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠক করেন। বিকেল চারটার পর এ বৈঠক শুরু হয়ে প্রায় ১৫ মিনিট দু'জন একান্তে কথা বলেন।

বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ড. ‌আব্দুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ।

বৈঠক শেষে মঈন খান বলেন, বৈঠকে আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, সরকার আসবে, সরকার যাবে, কিন্তু দেশের মানুষ দেশেই থাকবে। একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আস্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সর্ম্পক প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার কথা হয়েছে দেশের যুবকদের নিয়ে, শিশুদের নিয়ে এবং সর্বপরি কথা হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে বলেও জানান মঈন খান।  

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে‍ছি, এখন নরেন্দ্র মোদিকে দক্ষিণ এশিয়া অর্থ্যাৎ সার্কের উন্নয়য়ের প্রতি যেভাবে তিনি জোর দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে হবে, উন্নয়নকে গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর শক্তিশালী করে।  গণতন্ত্র ব্যতিরেকে উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না।

মঈন খান বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, এখন বলা হচ্ছে, ‘উন্নয়ন আগে পরে গণতন্ত্র’, এটি বাস্তব সম্মত নয়। কোন উন্নয়ন মানুষের কল্যাণে আসবে না যদি না দেশে গণতন্ত্র থাকে, কথা বলার স্বাধীনতা থাকে। যদি না বিচার ব্যবস্থা সব কিছুর উপরে থাকে। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকে। যদি না সে দেশের নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ থাকে। যদি না প্রশাসন দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখে।

মঈন খান আরো বলেন, আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি- যদি সবাইকে সমান সুযোগ দিতে না পারা যায় এবং গণতন্ত্র না থাকে তাহলে কোন কিছুই সম্ভব নয়।  

ভারতের পররাষ্ট্র সচীব এস জয়শঙ্কর এই বৈঠক নিয়ে বলেন- ভারত গণতন্ত্রের পক্ষে তবে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিপক্ষে।

দুই বছর আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ঢাকা সফরে তার সঙ্গে খালেদা জিয়া দেখা করা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে এবার মোদীর এই সফরকে শুরু থেকে স্বাগত জানিয়ে আসছিল বিএনপি।

বিজেপি নেতা মোদীর উচ্চ প্রশংসাও এসেছে বিএনপির কাছ থেকে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা কখনোই ভারতবিরোধী ছিল না।

হরতালের কারণ দেখিয়ে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেও তার আগে ২০১১ সালে সোনারগাঁও হোটেলেই ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন খালেদা জিয়া।

গত বছর নরেন্দ্র মোদীর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গেও খালেদার বৈঠক হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত