স্পোর্টস ডেস্ক

২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ২৩:০৩

পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩

আগের ৭ লড়াইয়ে একপাক্ষিক ফল ছিল পাকিস্তানের পক্ষে, ধারণা করা হচ্ছিল বিশ্বকাপে তেমনই হবে। কিন্তু সেটা হতে দিল না আফগানিস্তান। পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে তারা। একপেশে লড়াই হয়েছে মাঠে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কর্তৃত্ব বজায় রেখে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান।

আফগানিস্তানের এই জয় বিশ্বকাপে টানা দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে। আগের ম্যাচে তার হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে, আর আজ পাকিস্তানকে।

২৮৩—লক্ষ্যটা মোটেও কম নয়। ওয়ানডেতে লড়াকু পুঁজিই বলা যায়। কিন্তু সেটি তাড়া করতে খুব বেশি কষ্ট করতে হলো না আফগানিস্তানকে। শুরুতে দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানকে ফেরাতেই পাকিস্তানি বোলারদের ঘাম ছুটেছে। ১৩০ রানের এই উদ্বোধনী জুটিই আফগানদের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে আফগানিস্তানের বাকি কাজটা সারেন রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে আফগানদের জয় ৮ উইকেটে।

আফগান ব্যাটাররা ছাড়াও পাকিস্তানকে ভুগিয়েছে তাদের বাজে ফিল্ডিং। বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি হয় ফিল্ডারদের ভুলে। গুরবাজ-জাদরানের জুটি ভেঙে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরানোর আভাস দিয়েছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। উসামা মীরের হাতে বন্দী হয়ে ৫৩ বলে ৬৫ রান করে ফেরেন গুরবাজ। তবে তাতেও আফগানদের রানের চাকা থামানো যায়নি। দ্বিতীয় উইকেটে রহমতের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন ইব্রাহিম। এই জুটি ভাঙে দলীয় ১৯০ রানে। হাসান আলীর বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে দিয়ে বসেন ইব্রাহিম। থামে তাঁর ১১৩ বলে ৮৭ রানের ইনিংসটি।

তবে এরপর পাকিস্তান বোলারদের মোটেও সুযোগ দেননি রহমত ও শহীদি। দুজনের ৯৩ বলে ৯৬ রানের জুটিতে ৭৯ বলে আফগানিস্তান করে ২৮৬ রান। শাহিনের করা ৪৯তম ওভারের শেষ বলে চার মেরে আফগানদের ঐতিহাসিক জয় এনে দেন হাশমতউল্লাহ। ৪৫ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৮৪ বলে ৭৭ রান করেন রহমত।

এই বিশ্বকাপেই দুটিই অঘটন ঘটাল আফগানিস্তান। এর আগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল তারা। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ে সেমিফাইনালে খেলার আশাও বাঁচিয়ে রাখল। এর আগে টি-টোয়েন্টি জিতলেও এবারই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতল আফগানিস্তান। এ নিয়ে আটবার মুখোমুখি হলো দুই দল।

চেন্নাইয়ে আজ টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই হয়েছিল পাকিস্তানের। ওপেনিং জুটি ভাঙে ৫৬ রানে, ইমাম-উল-হকের (১৭) বিদায়ে। এরপর অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি আবদুল্লাহ শফিকের। তার আগে এক ছক্কায় পাকিস্তানের ১৬ মাস ও ১৩৬২ বলের খরাও কাটান এই ওপেনার। পাওয়ার প্লেতে এই সময়ের পর ছক্কা মারতে পারল পাকিস্তান।

শফিক-বাবরের ছোটার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান নুর আহমেদ। ব্যক্তিগত ৫৮ রানে আফগান স্পিনারের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন শফিক। দলের স্কোরবোর্ডে রান তখন ১১০, তার সঙ্গে আর ১০ রান যোগ হতেই নুরের আরেকটি আঘাত। এবার ফেরেন উইকেটরক্ষক রিজওয়ান (৮)। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করা বাবরকেও ফেরান এই রিস্ট স্পিনার।

তার আগে দলের প্রয়োজনীয় মুহূর্তে ইনিংস বড় করতে পারেননি সৌদ শাকিল (২৫)। বাবর ফেরার আগে শাকিল ও শাদাব খানের সঙ্গে করেন সমান ৪৩ রানের জুটি। পাকিস্তান ৭ উইকেটে ২৮২ রানের লড়াকু পুঁজি পায় শাদাবের সঙ্গে ইফতিখার আহমেদের ষষ্ঠ উইকেটে ৪৫ বলে ৭৩ রানের জুটিতে। নাভিন-উল-হককে উইকেট দেওয়ার আগে দুজনই করেন সমান ৪০ রান। ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন শাহিন।

পাঁচ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন টেবিলের ছয়ে উঠে এলো আফগানিস্তান। ২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের নিচে নেমে এসেছে বাংলাদেশ। ৫ ম্যাচের প্রথম দুটিতে জিতলেও এরপর টানা তিন হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আফগানদের ওপরেই আছে পাকিস্তান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত