স্পোর্টস ডেস্ক

৩০ মার্চ, ২০১৬ ১০:৪৯

সেমির লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ড ইংল্যান্ড

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১৬

নিউজিল্যান্ড সারা বছর যে ক্রিকেটই খেলুক না কেন আইসিসির কোন ইভেন্ট এলে দেখা যায় তাদের বিধ্বংসী রূপে। একের পর এক ম্যাচ জয় সেমিফাইনাল, এবং অতঃপর কোন কারণ ছাড়াই ছন্দপতন- এটাই যেন তাদের নিয়তি। তবে সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তারা ফাইনাল খেলে প্রমাণ করে দিয়েছে কেবল সেমিফাইনালেরই দল নয় তারা। ফাইনাল খেলতেও জানে; তবে এবার কি এথেকে আরও একটু উত্তরণ- চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন!

এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তারা। আর মাত্র দুই ম্যাচ জিতলে আরাধ্য শিরোপা জয়। পারবে কি তারা? সে উত্তর হয়ত ৩এপ্রিলের রাতে লেখা। তবে তার আগে সেমিফাইনালে তাদেরকে আগে হারাতে হবে ইংল্যান্ডকে।

টুর্নামেন্টের একমাত্র দলই তারা, যারা হারেনি একটি ম্যাচও। প্রতি ম্যাচেই প্রায় প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাই সমীহ জাগানো দল নিউজিল্যান্ড। অথচ এই দলটি আগের পাঁচ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একবারও খেলতে পারেনি ফাইনাল। সর্বোচ্চ অর্জন সেমিফাইনাল, ২০০৭ সালে। নয় বছর পর আবারো টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কিউই শিবির। হাতছানি দিচ্ছে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার।

তা করতে হলে ইংল্যান্ড বাধা দূর করতে হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। যারা জিতবে, তারাই খেলবে তিন এপ্রিলের রোমাঞ্চকর ফাইনাল। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি, মাছরাঙা টিভি, বিটিভি, স্টার স্পোর্টস ১ ও ৩।

সুপার টেন পর্বে টানা চার জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে ইংল্যান্ডও কম যায়নি। প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারলেও, পরের তিন ম্যাচ টানা জিতে সেমিফাইনালে নাম লেখায় ইংলিশ শিবির। শেষের তিন ম্যাচের জয়ে ভীষণ উজ্জীবিত মরগ্যান শিবির। কিউইদের বধ করে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে নাম লেখাতে প্রস্তুত তারা।

২০১০ সালে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। সেবার ফাইনালে কেভিন পিটারসের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ক্রিকেটে বৈশ্বিক কোন শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। এবার সামনে দুটি ধাপ, পেরুতে পারলেই দেখা মিলবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা।

তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পরিসংখ্যান ফেভারিট বলছে নিউজিল্যান্ডকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এ পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ১৩বার। তাতে সিংহভাগ জয় নিউজিল্যান্ডের, ১০টিতে। তিনটিতে জয় ইংল্যান্ডের। এর মধ্যে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টানা ছয় ম্যাচে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। পাত্তা পায়নি ইংল্যান্ড। সুপার টেন পর্বে চার ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬৮ রান করা ইংল্যান্ডের জো রুট অবশ্য আশা জাগাচ্ছে ইংলিশদের।

ফাইনালে উঠতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ইংলিশ অধিনায়ক মরগ্যান। যদিও নিউজিল্যান্ডকে পূর্ণমাত্রায় সমীহ করছেন তিনি, ‘গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ড অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে। যা তাদের ইতিহাসে সেরা ক্রিকেট সম্ভবত। তবে আমরাও বিভিন্ন স্টেজে নিজেদের চিনিয়েছি। সেমিফাইনালের আগে আমরা ঐক্যবদ্ধ। ফাইনালে চোখ রেখেই মাঠে নামব আমরা’।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের কণ্ঠেও একই সুর, ‘গ্রুপ পর্বটা ভালো কেটেছে আমাদের। তবে এবার নক আউট ম্যাচ। হারলেই বিদায়। ফলে চাপ থাকছে এই ম্যাচে। তবে দল উজ্জীবিত। সেরাটা দিতে পারলে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলব আমরা।’

ইংল্যান্ড একাদশ (সম্ভাব্য): জ্যাসন রয়, আলেক্স হেলস, জো রুট, জস বাটলার, ইয়ন মরগ্যান, বেন স্টোকস, মঈন আলী, আদিল রশিদ, ক্রিস জর্ডান, ডেভিড উইলে, লিয়াম প্লাংকেট।
নিউজিল্যান্ড একাদশ (সম্ভাব্য): মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসন, কলিন মুনরো, কোরি অ্যান্ডারসন, রস টেইলর, গ্রান্ট ইলিয়ট, লুক রঞ্চি, মিশেল সান্টনার, অ্যাডাম মিলনে, ইশ সোধি, মিশেল ম্যাক্লিনাঘান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত