স্পোর্টস ডেস্ক

৩০ এপ্রিল, ২০১৬ ২২:৫৪

দেশের ফুটবলের দায়িত্বে আবারও কাজী সালাউদ্দিন

সাবেক ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বাফুফে'র সভাপতি হলেন কিংবদন্তি এ ফুটবলার।

রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে শনিবারের (৩০ এপ্রিল) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ী কামরুল আশরাফ খানকে হারান সালাউদ্দিন। ১৩৪টি ভোটের মধ্যে সালাউদ্দিন পেয়েছেন ৮৩টি, আশরাফের বাক্সে পড়েছে ৫০ ভোট। একটি ভোট বাতিল হয়।

বিকেল পাঁচটার খানিক পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন ফল ঘোষণা করলে পরাজয় মেনে নেন আশরাফ।

“আমি হার মেনে নিয়েছি। ৫০ ভোটও কম ভোট না। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সালাউদ্দিন চাইলে আমি তাকে ফুটবলের উন্নয়নে সহযোগিতা করবো।”

জয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় সালাউদ্দিন বলেন, “(এ জয়) ফুটবল এবং সত্যের জয়। ফুটবল এবং সত্যের জয় হবেই।”

২০০৮ সালে সালাউদ্দিন প্রথমবারের মতো বাফুফের সভাপতি হন। ২০১২ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ঘরোয়া ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব পান স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই ফরোয়ার্ড।

ঘরোয়া ফুটবলের কিংবদন্তি সালাউদ্দিন ক্লাব ক্যারিয়ারের সোনালী সময়টা কাটান ঐতিহ্যবাহী আবাহনী লিমিটেডে; খেলেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রেও।

সংগঠক হিসেবেও ঘরে-বাইরে পরিচিত মুখ সালাউদ্দিন। দুই দফায় বাফুফে সভাপতির দায়িত্ব পালনের আগে ছিলেন সংস্থাটির সহ-সভাপতিও। দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের টানা দুইবারের সভাপতি (বর্তমানেও দায়িত্বে আছে)। ফুটবলের বিশ্বসংস্থা ফিফার মার্কেটিং কমিটির সদস্যও ৬১ বছর বয়সী এই সাবেক ফুটবলার।

গত দুই মেয়াদে সালাউদ্দিনের সেরা সাফল্য ফুটবলকে নিয়মিত মাঠে রাখা। কোটি টাকার সুপার কাপ, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপের আয়োজন, লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আনা, সিলেট একাডেমি প্রতিষ্ঠা, নিয়মিত ফুটবলার তৈরির আসর পাইওনিয়ার লিগ সচল রাখা, ঢাকার বাইরে একাধিক ম্যাচ আয়োজন তার এই দুই মেয়াদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে সালাউদ্দিনের প্যানেল সম্মিলিত পরিষদের দেওয়া ২৫ দফা প্রতিশ্রুতির মধ্যে জাতীয় দলের সাফল্যের জন্য দেশের সকল ক্লাবকে অর্থ, কোচ দিয়ে অনুর্ধ-১৪, ১৬, ১৮ দল গঠন, বন্ধ হয়ে যাওয়া ফুটবল একাডেমি পুনরায় চালু, আন্তর্জাতিক মানের ফিটনেস সেন্টার গড়ে তোলা, প্রতিটি বিভাগে ফুটবল টার্ফ স্থাপন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে একাডেমি গড়ে তোলা, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ (শেরেবাংলা কাপ) চালু, মাঠ সমস্যার সমাধান, জেলার ক্লাবগুলোর সমম্বয়ে ‘ক্লাব কাপ’ পুনরায় চালুর প্রতিশ্রুতিগুলোই উল্লেখযোগ্য।

কাজী সালাউদ্দিন তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সাথে পাচ্ছেন কাজী নাবিল আহমেদ, বাদল রায়, তাবিথ আওয়াল ও মহিউদ্দিন মহিকে। সর্বোচ্চ ৯২ ভোট পেয়ে নাবিল সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন; বাকি তিন জয়ী সহ-সভাপতির মধ্যে বাদল ৭৩টি, মহিউদ্দিন ৭২টি ও তাবিথ পেয়েছেন ৬৬টি ভোট।

চার সহ-সভাপতির মধ্যে নাবিল, বাদল ও তাবিথ পুনরায় নির্বাচিত হলেন। আগের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে থাকা যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এবার নির্বাচন করতে পারেনি। সালাউদ্দিনের প্যানেল ‘সম্মিলিত পরিষদ’-এর প্রার্থী মহিউদ্দিন নতুন ঢুকলেন।

সিনিয়র সহ-সভাপতির পদে ভোটাভুটির দরকার পড়েনি। ‘বাঁচাও ফুটবল’ পরিষদের নেতৃত্বে থাকা শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইন-চার্জ লোকমান হোসেন ভূইয়া ও আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে পুনরায় থাকা নিশ্চিত হয়ে যায় সালাম মুর্শেদীর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত