স্পোর্টস ডেস্ক

১৪ মে, ২০১৬ ১৩:৪২

প্রিমিয়ার লীগে ১১ ছক্কায় মাশরাফির সেঞ্চুরি

ফাইল ছবি

এমন দ্রুতগতির সেঞ্চুরি আগে বাংলাদেশের কেউ করে নি, মারতে পারে নি গোনে গোনে ১১ ছক্কা! ঠিক এ কাজটিই করে দেখালেন বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

ঘরোয়া লীগে মাশরাফির ব্যাট সবসময়ই আগ্রাসী। তবে এবার আগের সকল রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেলেন তিনি। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে মাত্র ৫১ বলে ১০৪ রান করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে শনিবার ( ১৪ মে) টস হেরে  প্রথমে ব্যাট করে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র।  এ ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৫০ বলে শতক করেছেন মাশরাফি, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যেটি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম।

টর্নেডো এ ইনিংসটিতে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের অধিনায়ক মেরেছেন ১১টি ছক্কা। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটিও বাংলাদেশের রেকর্ড।

ম্যাচের শুরু থেকে রানের গতি ঠিক রেখে খেলতে থাকে কলাবাগানের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাফমান ইসলাম ও জসীমউদ্দিন। তবে বেশি দূর এগোতে পারেনি এই জুটি ৫.৩ ওভারে ৩০ রান করার পর সোহাগ গাজীর বলে সাদমান সরাসরি বোল্ড হলে বিচ্ছিন্ন হয় এই জুটি। সেখান থেকে দলের হাল ধরে মাসাকাদজা ও জসীমদ্দিন ৭১ রানের জুটি গড়ার পথে ২০ ওভারেই দলের শতক পূর্ণ করে।

দলীয় ১০১ রানে ব্যক্তিগত ৪৫ রানে মাসাকাদজার ফিরে যাওয়ার পর শেখ জামালের বোলারদের তোপের মুখে পর-পর জসীমউদ্দিন ও তাসামুল হকের বিদায়ে চাপে পড়ে কলাবাগান।

৩৫.৩ ওভারে ১৬৯ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বিপন্ন কলাবাগানের রানের চাকায় যখন লাগাম টেনে ধরেছে প্রতিপক্ষের বোলাররা, ঠিক তখনই ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। শুধুই কি ক্রিজে আসা? ক্রিজে এসে প্রতিপক্ষের বোলারদের রীতিমত নাস্তানাবুদ করে একের পর এক ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের রানের চাকা সচল করার পাশাপাশি দলকে এনে দিয়েছেন লড়াকু পুঁজি।

১১টি বিশাল ছয়ের সাথে ২ চারের মারে খেলেছেন ১০৪ রানের ইনিংস।

২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়াওয়েতে ৬৩ বলে শতক করেছিলেন সাকিব আল হাসান। আর গত বছরের জানুয়ারিতে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির হয়ে লেজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের বিপক্ষে ১৪৬ বলে ১৫০ রানের ইনিংসে এনামুল হক মেরেছিলেন ১০টি ছক্কা।

মাশরাফির ইনিংসটি বাংলাদেশের মাটিতে তৃতীয় দ্রুততম লিস্ট ‘এ’ শতক। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ৪৫ বলে শতক করেছিলেন বায়ন লারা। ২০১৩ সালে ঢাকা লিগেই প্রাইম ব্যাংকের হয়ে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির বিপক্ষে ৪৬ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছেছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর।

এবারের লিগে তার দল ভালো করতে না পারলেও বল হাতে দারুণ ফর্মে মাশরাফি। তবে প্রত্যাশামতো কথা বলছিল না তার ব্যাট। শনিবার এক ইনিংসেই যেন পুষিয়ে দিলেন সব।

ফতুল্লায় মাশরাফি ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ছয় নম্বরে। ব্যাটিংয়ে যখন নামলেন, ইনিংসের তখন ৩৬তম ওভার। কলাবাগানের রান ৪ উইকেটে ১৬৯। রানের গতি বাড়াতেই মূলত নেমেছিলেন মাশরাফি।

তা পেরেছেনও বেশ। ৪৯তম ওভারে আউট হয়েছে, মাঝের সময়টায় চালিয়েছেন তাণ্ডব। ৩৫ বলে স্পর্শ করেছিলেন অর্ধশতক, ১টি চার ও ৪ ছক্কায়। পরের পঞ্চাশ ছুঁতে লেগেছে মাত্র ১৫ বল, তাতে ছক্কা আরও ৭টি!

৭৯ রান থেকে বাঁহাতি স্পিনার ওয়াহিদুল আলমের এক ওভারেই চার ছক্কা মেরে স্পর্শ করেছেন মাইলফলক।

শেষ পর্যন্ত পেসার শফিউল ইসলামের বলে মার্শাল আইয়ুবের হাতে ধরা পড়ে যখন ফিরছেন, মাশরাফির নামের পাশে ৫১ বলে ১০৪!

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এর আগে সাত বার অর্ধশতক স্পর্শ করেছিলেন মাশরাফি। সর্বোচ্চ ছিল ৬৯, গত বছরের এপ্রিলে বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে এই ফতুল্লাতেই।

মাশরাফির তাণ্ডবে ৫০ ওভারে কলাবাগান তুলেছে ৭ উইকেটে ৩১৬।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত