স্পোর্টস ডেস্ক

৩০ নভেম্বর, ২০১৬ ১৯:১৯

দোষ স্বীকার করে নিলেন সাব্বির-আল আমিন

শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে গিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সাব্বির রহমানকে তার চুক্তির ৩০ শতাংশ, মানে ১২ লাখ এবং আল-আমিন হোসেনকে চুক্তির ৫০ শতাংশ, মানে সাড়ে ১২ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হচ্ছে। মূলত হোটেলে ‘অনৈতিক’ কাজ করতে গিয়েই এই জরিমানা গুনতে হয়েছে জাতীয় দলের এই দুই ক্রিকেটারকে। পরে এই দুই ক্রিকেটার স্বীকারও করে নিয়েছেন তাদের দোষ।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলরের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘শৃঙ্খলার ব্যাপারে আমরা কোনও সময় কোনও ছাড় দিব না। আমি পরিস্কার করে বলতে চাই এটা ফিক্সিং সংক্রান্ত কোনও ঘটনা নয়, এটা পুরোপুরি শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা ছিল। প্রত্যেক হোটেলে আমাদের দুই-তিনটা টিম কাজ করে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করে দেখেছি এবং দুই খেলোয়াড়ের শুনানি হয়েছে। তারা দুজনই দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। এরপরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

জানা গেছে ‘নারীঘটিত’ কেলেঙ্কারির কারণে শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে সাব্বির ও আল-আমিনকে। যদিও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব মল্লিক সরাসরি তা বলতে অস্বীকার করলেন। তারপরও তার কথাতে ইঙ্গিত ছিল নারীঘটিত বিষয়টিই, ‘এটা তো আসলে বলার মতো কিছু না। জনসম্মুখে এটা আমরা বলতে চাইছি না। আমরা ধরতে পেরেছি এবং শাস্তি দিতে পেরেছি-এটাই বড় বিষয়। এটার মাধ্যমে আমরা একটা বার্তা দিতে চেয়েছি। তাদেরকে দেখে তরুণ খেলোয়াড়রা অনেক কিছু শিখবে।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে একজন ক্রিকেটার হিসেবে এই কাজগুলো তাদের করা উচিত নয়। এই ব্যাপারে বোর্ড সভাপতির একটা কড়া নির্দেশ আমাদের ওপর সব সময়ই ছিল।’

কোনও ক্রিকেটার শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর হবে বিসিবি। এ ব্যাপারে ইসমাইল হায়দার বলেছেন, ‘এটা পরিস্কার যেই অন্যায় করবে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত করে আমরা তাকে শাস্তি দিব। আগের চেয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে আচরণগত অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দুই-একটি ঘটনা ঘটবেই। ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যাকশন নিচ্ছি। আমার ধারণা ভবিষ্যতে এই কাজ তারা (সাব্বির ও আল-আমিন) আর করবে না। এর মাধ্যমে আমাদের অন্য খেলোয়াড়রাও সাবধান হয়ে যাবে।’

দল জিতলে উৎসব হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই উৎসব গভীর রাতে হয়। সেখানে এসব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব কিনা, কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজির এই পরিবেশ পরিবর্তন করা প্রয়োজন মনে করেন কিনা জানতে চাইলে মল্লিক বলেছেন, ‘উৎসব হতেই পারে, টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটকে ঘিরে সব সময়ই আছে। সব দেশেই বিদ্যমান। কেউ জিতলে ১২টা পর উদযাপন করে, কেউ হারলেও খেলোয়াড়দের চাঙ্গা রাখতে উদযাপন করে। উৎসব বন্ধ বা উৎসবের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব নেই আমার। সেটা যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না যায় বা আমাদের কোনও খেলোয়াড় শৃঙ্খলা ভেঙ্গে কোনও কাজ না করে সেটাই আামাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘খেলোয়াড়রা সবাই সচেতন। মাঝে মাঝে দুই-একটা ভুল হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে তারা শাস্তিও ভোগ করছে। আবার নিজেকে সংশোধন করে কাম-ব্যাকও করছে। সন্তান ভুল করলে বাবা-মা কিন্তু সন্তানকে শাসন করে। তারপরই কিন্তু ভুল পথ থেকে সন্তানকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্বও নেয়। একইভাবে বিসিবি যেহেতু ক্রিকেটারদের অভিভাবক, তাই বিসিবি এই ব্যাপারে কোনও ছাড় দিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্যাপারেও আমাদের নিয়ন্ত্রণ কঠোর থাকবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত