স্পোর্টস ডেস্ক

০৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৬:৩২

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১১ দেশে সেঞ্চুরির অনন্য রেকর্ড ইউনিসের!

প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সেঞ্চুরি করলেন ইউনিস খান। কিন্তু নিজের এই অর্জনটি উদযাপন করার মতো অবস্থায় কি আছেন?

উদযাপন করার সুযোগ পেলেন কোথায়? তাঁর ১৩৪ রানের দারুণ ইনিংসের পরও যে পাকিস্তান ধুঁকছে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৫৩৮ রানের জবাবে তৃতীয় দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৭১। ফলোঅন এড়াতেই আরও ২৬৭ রান লাগবে পাকিস্তানের।

দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের মাটিতেই সেঞ্চুরি পেলেন ইউনিস খান। যদিও ইউনিস সেঞ্চুরি করেছেন ‘টেস্ট খেলা হয়’, এমন ১১টি দেশেই। ২০০৯ সালের পর নিজের দেশে তো টেস্ট খেলারই সুযোগ হয়নি ইউনিসের। ৩৪তম টেস্ট সেঞ্চুরিটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে করে যেন বৃত্ত পূরণ হলো ৩৯ বছর বয়সী পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়কের। ইউনিসের আগে ভারতের রাহুল দ্রাবিড় একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দেশেই সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েছিলেন। আরব আমিরাতেও ইউনিসের সেঞ্চুরি আছে বলে তিনি দ্রাবিড়কেও ছাড়িয়ে যেতে পারলেন। ১১ দেশের মাটিতে টেস্ট সেঞ্চুরি, অবিশ্বাস্য এক কীর্তি, সন্দেহ নেই।

শুধু কীর্তির জন্য নয়, এই ‘বুড়ো’ বয়সেও ইউনিসের সেঞ্চুরিটার ধরনের জন্য মিলবে বাড়তি পিঠ চাপড়ানি। একদিক প্রায় একাই ধরে রেখে লড়াই চালিয়েছেন। পাকিস্তানের ইনিংসে আজহার আলীরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। ৭১ রানে রানআউট হয়ে ফেরার আগে ইউনিসের সঙ্গে গড়ে তোলেন ১৪৬ রানের বড় জুটি। সে সময় পাকিস্তান ছিল বেশ শক্ত অবস্থানে। সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে ৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ইউনিস-আজহার জুটিই স্কোরটাকে ওই ২ উইকেটেই ১৫২–তে নিয়ে গেল। পাকিস্তানের ইনিংসে আর কোনো ফিফটির জুটিও নেই।

কিন্তু আজহার আউট হওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট পড়েছে পাকিস্তানের। মিসবাহ-উল-হকের বাজে ফর্মটা দীর্ঘায়িতই হয়েছে—১৮ রানে ফিরেছেন। আসাদ শফিক আউট হয়েছেন ৪ রান করে। সরফরাজ আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে ইউনিস আরও একটি জুটি গড়ার পথে এগিয়ে গেলেও সেটি বড় হয়নি। ইউনিস-সরফরাজের ৪২ রানের জুটি পাকিস্তানের সংগ্রহটাকে একটু ভালো চেহারা দিয়েছে এই আরকি!

ইউনিস এখনো অপরাজিত আছেন ১৩৬ রানে। ২৭৯ বল খেলে ১৪টি চার ও ১টি ছয়ে নিজের ইনিংসটি খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৯৮৪ সালে ক্লাইভ লয়েড সেঞ্চুরি করেছিলেন ৪০ বছর বয়সে। ইউনিস করেছেন ৩৯-এ। ৩৪তম টেস্ট সেঞ্চুরি করে সংখ্যার দিক দিয়ে ঢুকে গেলেন সুনীল গাভাস্কার, ব্রায়ান লারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের পাশে। মাত্র পাঁচজন ক্রিকেটারেরই ইউনিসের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে—শচীন টেন্ডুলকার (৫১), জ্যাক ক্যালিস (৪৫), রিকি পন্টিং (৪১), কুমার সাঙ্গাকারা (৩৮) ও রাহুল দ্রাবিড় (৩৬)।

টেস্টে ফিফটির চেয়ে সেঞ্চুরির সংখ্যা বেশি ইউনিসের। ৩২টি ফিফটির বিপরীতে সেঞ্চুরি ৩৪টি। সর্বশেষ ১৫টি ফিফটির ১১টিকেই সেঞ্চুরিতে রূপান্তরিত করেছেন পাকিস্তানের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। ইউনিসের ব্যাটিং হয়তো সবার ভালো লাগবে না। কিন্তু তাঁর পরিশ্রম, তাঁর অন্তহীন চেষ্টাকে স্যালুট ঠুকবে সবাই।

অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন নিয়েছেন ৩ উইকেট, ৯৮ রানে। ফিরিয়েছেন মিসবাহ, মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজকে। স্টিভ ও’কিফের বলে স্লিপে আসাদ শফিকের এক দুর্দান্ত ক্যাচ নেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এই দুইয়ের পাশাপাশি জশ হ্যাজলউড নিয়েছেন ২ উইকেট। মিচেল স্টার্ক একটি।
সূত্র: স্টারস্পোর্টস

আপনার মন্তব্য

আলোচিত