স্পোর্টস ডেস্ক

১৪ মার্চ, ২০১৭ ১৮:০৭

মরিনহোর ‘মারমুখী’ কৌশলে মারাত্মক ক্ষেপেছেন চেলসির কোচ কন্তে

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফুটবলাররা ‘ফুটবল’ খেলতে স্টামফোর্ড ব্রিজে নেমেছিলেন, নাকি মারামারি করতে, এ নিয়ে বেজায় সন্দেহ আছে চেলসি কোচ অ্যান্তনিয় কন্তের। এফএ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পেলেও প্রতিপক্ষের ‘মারমুখী’ কৌশলে মারাত্মক খেপেছেন চেলসির ইতালীয় কোচ।

মাঠেই ইউনাইটেড কোচ হোসে মরিনহোর সঙ্গে একহাত হয়ে যেতে বসেছিল কন্তের। চতুর্থ রেফারির দ্রুত হস্তক্ষেপে বিব্রতকর এই দৃশ্যের অবতারণা হয়নি। তবে ম্যাচ শেষে কন্তে নিজের সব ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, ‘আমার দলের খেলোয়াড়েরা মাঠে নেমে ফুটবলই খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রথম ২৫ মিনিটে সেটি সম্ভব ছিল না। কেবল এডেন হ্যাজার্ডই মাঠে লাথির পর লাথি খেয়ে গেছে। আমার মনে করি না যে আমি পাগলের প্রলাপ বকছি।’

কন্তে হ্যাজার্ডের অবস্থা বর্ণনা করেছেন কিছুটা কৌতুকের সঙ্গেই, ‘হ্যাজার্ড ম্যাচ শুরু করেছে লাথি খেয়ে, ম্যাচ শেষও করেছে লাথি খেয়েই।’

এটাকে চেলসির বিপক্ষে মরিনহোর কৌশলই মনে করেন কন্তে, ‘আমি মিথ্যে বলছি না। সকলেই আমার সঙ্গে একমত হবেন। এটা ইউনাইটেডের কৌশল ছিল। অনেক সময় এটা হয়। প্রতিপক্ষ দলে অনেক বেশি সংখ্যক প্রতিভাবান ফুটবলার থাকলে তাদের নিষ্ক্রিয় করার জন্য এমন কৌশল নেওয়া হতেই পারে। তবে আমি এটাকে ফুটবল বলতে চাই না।’

ইউনাইটেড যে মাঠে পুরোপুরি হ্যাজার্ডকেই ‘পাখির চোখ’ বানিয়েছিল, সেটি অবশ্য দর্শকদের বুঝতে কোনো সমস্যা হয়নি। হ্যাজার্ডকে দুবার পায়ে মেরে মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে অ্যান্ডার হেরেরাকে। মার্কো রোহো তো একবার লালকার্ড দেখার হাত থেকেই বেঁচে গেছেন। রেফারির হাত থেকে বাঁচলেও রোহোর ব্যাপারটি অবশ্য গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। ৫১ মিনিটে এন গোলো কঁতের চেলসির জয়সূচক গোলটি করেন।

পশ্চিম লন্ডনে মরিনহোর ফেরাটা খুব সুখকর হয়নি। চেলসি সমর্থকেরা খুব একটা সদয় ছিলেন না তাদের পুরোনো ও সফল কোচের প্রতি। গ্যালারিতে স্লোগান উঠছিল, ‘মরিনহো, তুমি আমাদের কাছে এখন আর বিশেষ কেউ নও।’ মরিনহো অবশ্য গ্যালারির দিক স্মিতহস্যে নিজের তিনটি আঙুল উঁচিয়ে দেখান। মরিনহোর অধীনে চেলসি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের যে তিনটি শিরোপা জিতেছিল, মরিনহো চেলসি সমর্থকদের তিন আঙুলে মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিই।

গত মৌসুমে চেলসির বাজে পারফরম্যান্সের কোপ পড়েছিল মরিনহোর শরীরে। কাল খুব সম্ভবত জয়-পরাজয়ের চেয়েও মুখ্য হয়ে উঠেছিল, সেই পুরোনো জ্বালাই। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কন্তেকে এক হাত তো নিয়েছেনই। সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, স্টামফোর্ড ব্রিজে তাঁর নিজের যে অর্জন, সেটির ধারে-কাছে যেত কন্তে এবং তাঁর সহযাত্রীদের অনেকটা পথই অতিক্রম করতে হবে, ‘তাঁরা আমাকে যা খুশি তা-ই বলতে পারেন। আমি আপাদমস্তক পেশাদার।আমি গত মৌসুমে চেলসির বাজে খেলার দায় ভার নিয়েছি। আজ তারা ইউরোপে খেলছে না। এটার জন্য তো আমি দায়ী নই। চেলসিকে তিনবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জেতানো ম্যানেজার যদি কেউ থেকে থাকে, তাহলে সে আমিই। আজকের ম্যাচে আমরা কিন্তু জিততেই পারতাম। কিন্তু ১০ জনে পরিণত হওয়ায় পুরো ব্যাপারটিই কঠিন হয়ে গেছে।’
সূত্র: এএফপি

আপনার মন্তব্য

আলোচিত