জৈন্তাপুর প্রতিনিধি

১৪ জুন, ২০২০ ১৩:৪৪

জৈন্তাপুরে শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিও আবেদনে জালিয়াতির অভিযোগ

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তা পূর্বরাজ মহবুবুল আম্বিয়া চৌধুরী মেমোরিয়াল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষক নিয়োগ এবং এমপিওর জন্য আবেদনে অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপন করে অভিযোগ দায়ের করার পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। ফলে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এলাকাবাসী উদ্যোগে ১৯৯৮ইংরেজিতে জৈন্তা পূর্বরাজ লালাখাল হাইস্কুল নামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয় নাম পরিবর্তন করে জৈন্তা পূর্বরাজ মহবুবুল আম্বিয়া চৌধুরী মেমোরিয়াল নিম্ন মাধ্যমিক করা হয়। অভিযোগকারী অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও জৈন্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদ ১১ জুন বাদি হয়ে উপ-পরিচালক মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চল, সিলেটের বরাবরে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগসহ এমপিওভূক্তিতে শিক্ষকদের নিকট থেকে অর্থ আদায়ের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগে বলা হয়, ৯ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে দৈনিক জালালাবাদ এবং দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করেন। প্রকৃত পক্ষে ২০০৩ সনের ৯ ডিসেম্বরের দৈনিক জালালাবাদ এবং দৈনিক ইনকিলাব মূল কপিতে বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের কোন বিজ্ঞাপন ছাপা হয়নি বরং জালিয়াতির মাধ্যমে পত্রিকার বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বিদ্যালয়ে নিয়োগ লাভ করেন, কিন্তু বিদ্যালয়ের এমপিওভূক্তির জন্য আবেদনে তিনি ২০ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া নিয়োগ কাগজপত্র দাখিল করেন। অথচ প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম ২০১৩ সন পর্যন্ত বিয়াম কুদরত উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন যার তথ্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে বিদ্যমান রয়েছে।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসর মোহাম্মদ সুলাইমান হোসাইন এমপিওর জন্য আবেদন করার সময় শিক্ষকদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। এই টাকা না দিলে ফাইল চলে না বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে শিক্ষকরা সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে এমন তথ্য জানান। তথ্য দেয়া সে সকল শিক্ষকদের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে নিয়ে সে অফিসার ধমক দেন এবং টাকা নেননি বলে সবার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন।

জৈন্তা পূর্বরাজ মহবুবুল আম্বিয়া চৌধুরী মেমোরিয়াল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তথ্য যাচাইবাছাই না করে এমপিওর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে সুপারিশ করে।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ নিয়মিত শিক্ষক ও অফিস সহকারী পদে মোট ৬ জন আবেদন করেন। ২ শিক্ষকসহ ১ জন অফিস সহকারী কাগজপত্রে ত্রুটি দেখিয়ে ফাইল ফেরত পাঠালে বিষয়টি এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করে। এ নিয়ে উপজেলার সর্বত্র আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

এ বিষয়ে একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সুলাইমান হোসাইন বলেন, আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। পত্রিকায় ছাপানো বিজ্ঞাপনটি নকল তা স্ক্যানিং কপিতে বুঝার কথা নয়। যদি মূল পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞাপন না থাকে তাহলে এমপিও আবেদন বাতিল বলিয়া গণ্য করা হবে বলে তিনি জানান। তারপরেও বিষয়টি জানায় আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত