তাহিরপুর প্রতিনিধি

২১ জুন, ২০২০ ১৩:৫৬

তাহিরপুরে জমে উঠেছে নৌকার হাট

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে নৌকা কেনাবেচা করাকে কেন্দ্র করে নৌকা বিক্রির হাট জমে উঠে ভাটির জনপদ কাউকান্দি বাজারে। এখানে অনেকেই আবার পুরনো নৌকা বিক্রি করে নতুন বিভিন্ন আকৃতির তৈরি নৌকা কিনে নিয়ে যায়।

জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর থানা ও তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাওরপাড়ের বাসিন্দারা বর্ষায় নৌকার চাহিদা মিটিয়ে থাকে। ফলে নৌকার বেচাকেনার হাট বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে বাজার জমে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

নৌকা কেনাবেচার এ হাটটি জেলার তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন কাউকান্দি বাজার। বর্ষার শুরুতেই সপ্তাহে দুইদিন শনি ও মঙ্গলবার বসে নৌকার হাট।

জানা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ২৪৯টি গ্রামের লোকজন বর্ষা মৌসুমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতের জন্য নৌকার ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হাওর জনপদে নৌকার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তাই বর্ষা মৌসুমে অনেকে এ পেশাকে কাজে লাগিয়ে নৌকা তৈরি করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। নাগরিক জীবনে এ কারণে কদর বেড়ে যায় কাঠের তৈরি এ যানটির।

এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামের লোকজন হাটবাজার, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও উপজেলা সদরে আসা-যাওয়ার জন্য আবার অনেকে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য নৌকা কেনেন। এ কারণে তাহিরপুরে বর্ষা মৌসুম এলেই গ্রামগঞ্জে নৌকা কেনাবেচার হিড়িক পড়ে যায়। আর এ বিপুল পরিমাণ নৌকার চাহিদা থেকে উপজেলার কাউকান্দি বাজারে দীর্ঘদিন ধরে জমে উঠেছে নৌকার হাট।

জানা যায়, প্রতি বছর উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় থেকে ইজারা চুক্তির মাধ্যমে আনা হয় এই বাজারটি। এতে করে প্রতি বছর সরকারের আয়ের উৎস হিসাবে এই হাট পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, হাওরবেষ্টিত এ উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে ঘর থেকে বের হলেই প্রয়োজন হয় নৌকার। তাই স্থানীয় নৌকা তৈরির কারিগরেরা নৌকা তৈরি করে বিক্রির জন্য গত এক যুগ ধরে পরিচিতি পেয়েছে কাউকান্দি বাজারটি।

নৌকা বিক্রেতা আশরাফুল মিয়া বলেন, হাওরবেষ্টিত উপজেলার অন্যতম নৌকা কেনাবেচা করার কেন্দ্র কাউকান্দি বাজার। বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে নৌকার বাজার জমে উঠে। আমি প্রতি বছর এই বাজারে সপ্তাহে দুইদিন নৌকা বিক্রয় করে সংসার খরচ বহন করি।

নৌকা ক্রেতা আমিরুল ইসলাম জানান, নৌকা বিক্রির হাট হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে কাউকান্দি বাজারটি। এখানে পছন্দমতো নৌকা কিনেছি আর দাম মোটামুটি ভালোই।

ইজারাদার বাচ্ছু মিয়া জানান, আমি দুই বছর ধরে এই নৌকার বাজারটি ইজারা চুক্তির মাধ্যমে ইজারাদারের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকি। গত ১৪২৬ বাংলা সন থেকে ১৪২৭ বাংলা প্রতি বছরের মত দ্বিতীয়বার এই বাজারের ইজারাদারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত