মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্তকে অপহরণের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লিমন (২৬) নামের ওই আসামিকে গত মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওইদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

লিমন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার নন্দিরফল এলাকার মুহিবুর রহমানের ছেলে।

অপরদিকে অপহরণের ঘটনায় কারাগারে থাকা দুই আসামি কবির হোসেন ও জুবের আহমদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। বুধবার (১৬ জুন) তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার ভার্চুয়াল আদালতে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমার দুজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

অপরদিকে সাত দিনের রিমান্ডে থাকা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের একজন সবুজ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের রিমান্ড শেষ হওয়ায় তাকে বুধবার আদালতে হাজির করা হলে আদালত সবুজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

                                                                       ছবি: অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারীদের একজন সবুজ হোসেন।

মামলাটির তদন্ত করছেন বড়লেখা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথ। তিনি বুধবার (১৬ জুন) বিকেলে বলেন, ‘ব্যবসায়ী অপহরণের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারাগারে থাকা দুই আসামির সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এই ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া সাত দিনের রিমান্ডে থাকা সবুজ হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’  

প্রসঙ্গত, বড়লেখা পৌরসভার বারইগ্রাম এলাকার সতেন্দ্র কুমার দত্তের ছেলে বড়লেখা শহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্ত গত ৪ জুন সন্ধ্যায় সিলেট যাবার পথে অপহরণ হন। পরে অপহরণকারীরা বিভিন্ন ভিওআইপি নম্বর থেকে তার ছোট ভাই সুবোধ কুমার দত্তের মুঠোফোনে ফোনে কল করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এরপর সুবোধ কুমার দত্ত বড়লেখা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে থানা পুলিশের বিশেষ টিম, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শশাংককে উদ্ধারে নেমে অভিযান অব্যাহত রাখে। গত ৬ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পুলিশ, ডিবি ও র‌্যাবের একটি দল যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির বাহাদুরপুর চা বাগানের নির্জন জঙ্গল থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্তকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী ইসমাইল আহমদ হারুন ও জুলমান আহমদকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনার মূল পরিকল্পনকারীদের একজন সবুজ হোসেনকে পরদিন ৭ জুন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত ৮ জুন অপহরণ কাজে ব্যবহৃত নোহা মাক্রোবাস গাড়িটি উদ্ধার এবং আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১৫ জুন) ভোরারাতে বিয়ানীবাজার থেকে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।