বিশ্বনাথ প্রতিনিধি

৩১ জুলাই, ২০২২ ১৯:৩৯

বিশ্বনাথে প্রবাসীর বিরুদ্ধে পুকুরের পানি নিস্কাশন বন্ধের অভিযোগ

সিলেটের বিশ্বনাথের সাধুরগাঁও গ্রামে পুকুরের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে আলী হাসান কামরুল নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর বিরুদ্ধে। পানির পাইপের মুখে দেয়াল নির্মাণ করে প্রবাসী আলী হাসান কামরুল পানি নিস্কাশন বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন পুকুর মালিক লাইছ মিয়া।

এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দু’পক্ষই বিশ্বনাথ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
 
রোববার (৩১ জুলাই) এলাকাবাসীর পক্ষে গ্রামের আব্দুল আলীম নামের একজন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ওই প্রবাসী কামরুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে অভিযুক্ত করেছেন প্রবাসী কামরুলের চাচাতো ভাই গৌছ আলী (৪৫), বাবুল মিয়া (২৫), শশুড় সুন্দর আলী (৬৫), শ্যালক বদরুল ইসলাম (২১), ভাতিজা মামুন মিয়া (২০) সহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে।

আব্দুল আলীম ও লাইছ মিয়ার দাবি, পানি নিস্কাশন বন্ধ করায় জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়ে ‘কালিগঞ্জ-মনাইকান্দি’ সড়কের সাধুরগাঁও এলাকার বেশ কিছু অংশ ভেঙে যাচ্ছে। পানিবন্ধী হয়ে পড়েছেন পুকুর মালিক লাইছ মিয়া ও প্রতিশেী ইছাক আলী এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিনিও।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সাধুরগাঁও গ্রামের লাইছ মিয়ার পুকুরের পানি ‘কালিগঞ্জ-মনাইকান্দি’ পাকা সড়কের নিচের পাইপ দিয়ে নিস্কাশন হয়ে আসছিল। কিন্তু নিজের জায়গা হওয়ায় সম্প্রতি তা বন্ধ করে দেন একই গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলী হাসান কামরুল। এতে দু’পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। সংঘর্ষ এড়াতে আব্দুল আলীম মধ্যস্থতা করে সাধুরগাঁও ও দাউদপুর গ্রামের পঞ্চায়েতগনের স্মরনাপন্ন হন। এক পর্যায়ে দেওকলস ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খায়রুল আমিন আজাদ, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে পঞ্চায়েতগণ বিষয়টি নিস্পত্তি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে আরও ক্ষিপ্ত হন প্রবাসী কামরুল।

গত বুধবার (২৭ জুলাই) পুকুর মালিক লাইছ মিয়া, আব্দুল আলীমসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। ওইদিন রাতে তার পক্ষের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে পাইপের মুখে দেয়াল নির্মাণ করে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা একেবারেই বন্ধ করে দেন। ফলে, জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়ে এলজিইডির ‘কালিগঞ্জ-মনাইকান্দি’ পাকা সড়কের বেশ কিছু অংশ ভেঙে যাচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পুকুর মালিকসহ সাধুরগাঁয়ের বাসিন্ধারা।

এতে ওই প্রবাসী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) থানায় পাল্টা অভিযোগ দেন পুকুর মালিক লাইছ মিয়া। আর রোববার প্রবাসীসহ তার চাচাতোভাই, শশুড়র ও শ্যালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউএনও বরাবরে অভিযোগ দেন আব্দুল আলীম। অভিযোগ পেয়ে থানার তদন্ত ওসি জাহিদুল ইসলাম, এসআই আজহার, এসআই আবুল কাশেম, এসআই দ্বিপংকর সরকার কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রবাসী আলী হাসান কামরুল এ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি এখনও বৈঠকে আছি, দুই ঘন্টা পরে আপনাকে কল দিয়ে কথা বলবো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ও সাধুরগাঁও মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মাহমদ আলী বাবুল বলেন, পঞ্চায়েতগণ বিষয়টি নিস্পত্তির চেষ্ঠা করেছিলেন কিন্তু প্রবাসী তাদের কথা না মানায় তারা ব্যর্থ হয়েছেন।

বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, তদন্ত ওসি জাহিদুল ইসলাম ছুটিতে আছেন, অভিযোগের বিষয়টি তিনি দেখবেন।
 
এব্যাপারে জানতে বিশ্বনাথ থানার তদন্ত ওসি জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্থার নিকট যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেটার অনুলিপি তিনি পেয়েছেন। এরই মধ্যে গোপন তদন্তে ঘটনার সত্যতাও পেয়েছেন। কিন্তু তারপরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুসরাত জাহান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত