জুড়ী প্রতিনিধি

১০ মে, ২০২৪ ২১:২৭

শাহাব উদ্দিন সমর্থিত প্রার্থীরা ধরাশায়ী, উচ্ছ্বসিত বিরোধীরা

জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ১ম ধাপে জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় ৮ মে বুধবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় প্রতীক ছাড়া এ নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের পাশাপাশি নেতাদের ঘুম হারাম ছিল।

বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয়ভাবে কাউকে সমর্থন না দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও নিজেদের অনুসারীদের নিজ বলয়ের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ ছিল নেতৃবৃন্দের।

জুড়ীতে স্থানীয় সংসদ শাহাব উদ্দিন মনোনীত প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এতে সংসদ সদস্য বিরোধী বলয়ের নেতাকর্মীরা উচ্ছাসিত।

মৌলভীবাজার -১ (জুড়ী -বড়লেখা) আসনের ৫ বারের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন দুই উপজেলায় দুইজন। অপর দিকে বিগত সংসদ নির্বাচনে এ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের মনোনীত প্রার্থীও ছিলেন দুই উপজেলায়।

ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, বড়লেখা উপজেলায় সংসদ সদস্য শাহাব উদ্দিনের ভাগনে, বর্তমান চেয়ারম্যান শোয়েব আহমদ হেরেছেন জাকির হোসাইন সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজির উদ্দিনের কাছে।

শোয়েব আহমদের প্রাপ্ত ভোট ২৮ হাজার ৩৬৯, অপর দিকে আজির উদ্দিনের প্রাপ্ত ভোট ৩২ হাজার ৯১৬। অপর প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বিগত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম সুন্দর পেয়েছেন ১৯ হাজার ৬৩৫ ভোট।

এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তাজ উদ্দিনকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন আবিদুর রহমান। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাহেনা বেগম হাসনার প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় আগেই তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

অপর দিকে জুড়ী উপজেলায় সংসদ সদস্য মনোনীত প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাসের মনোনয়ন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ উপজেলায় ছয় জন প্রার্থীর মধ্যে সংসদ সদস্য মনোনীত প্রার্থী রিংকু রঞ্জন দাস হয়েছেন চর্তুথ। তার প্রাপ্ত ভোট ৪ হাজার ৯৪০।

জাকির হোসাইন সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি প্রতিদ্বন্দ্বি রিংকু রঞ্জন দাসের চেয়ে ১৪ হাজার ৯৭৮ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক। রিংকু রঞ্জন দাসসহ তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ৮ হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন আঞ্জুমানে আল ইসলাহর উপজেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুস শহীদ। তিনি পেয়েছেন ১৩ হাজার ২৭৯ ভোট।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রনজিতা শর্মাকে প্রায় দশ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন শিল্পী বেগম।

জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জুড়ীর মানুষ টিআর, কাবিখার টাকা লুটকারী, সরকারি ডিপ টিউবওয়েল বিক্রিকারীদের ব্যালটের মাধ্যমে প্রতিহত করেছে।

বড়লেখার বর্ণি ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা হেরেও জিতে গেছি। কারণ আমাদের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সুন্দর হারলেও বড়লেখার মানুষ স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে মামা-ভাগনার রাজত্বকে এক ধাপ পেছনে ফেলে দিয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো শাহীন আকন্দ জানান, মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা ১৫ পার্সেন্টের কম যেসব প্রার্থী পেয়েছেন তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত